Category: Duck Breed

details about different duck breed.

  • কোন জাতের হাঁস বেশি ডিম দেয় – জানুন বিস্তারিত

    কোন জাতের হাঁস বেশি ডিম দেয় – জানুন বিস্তারিত

    হাঁস পালনের ক্ষেত্রে সবার মনেই একটা প্রশ্ন থাকে, কোন জাতের হাঁস বেশি ডিম দেয় ? এর উত্তর হচ্ছে সঠিক খাদ্য ব্যাবস্থাপনায় খাকি ক্যাম্পবেল ও জিন্ডিং হাঁস সর্বাধিক ডিম দেয়। এই জাত দুটির হাঁস প্রায় ৮৫% পর্যন্ত ডিম দিতে পারে। তবে ইন্ডিয়ান রানার হাঁসও বেশ ভালো ডিম পারে।

    প্রথমত আমরা জানবো ডিম উৎপাদনকারী হাঁস কোনটি?

    যে জাতের হাঁস বেশি পরিমানে ডিম দেয় অর্থাৎ উৎপাদণের জন্য পালন করা হয় তাদের কে ডিম উৎপাদনকারী হাঁস বা ডিম দেওয়া হাস বলে।। ডিম উৎপাদনকারী হাঁসের জাত হলো- খাকি ক্যাম্পবেল, জিনডিং, ইন্ডিয়ান রানার ইত্যাদি।

    খাকি ক্যাম্পবেল জাতের হাঁস (khaki Campbell)

    খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস আমাদের দেশে ডিম উৎপাদনের জন্য সবথেকে জনপ্রিয়। পৃথিবীর অন্যতম বেশি ডিম উৎপাদন ক্ষমতার অধিকারী এই খাকি ক্যাম্পবেল জাতের হাঁস। এই জাতটিকে অনেকে দেশীয় জাত মনে করে ভুল করে।

    খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস মাঝারি আকারের। মায়া হাঁসের পালকের রং খাকি, মাথা এবং ঘাড় ব্রোঞ্জ রঙের। পা ও পায়ের পাতার রং কালো। হাঁসার সবুজ পাখা, সমৃদ্ধ গাঢ় কমলা পা ও গাঢ় বাদামী চোখক। ঠোটের রং নীলাভ কালো। এদের চোখ গাঢ় বাদামী ও গড় ওজন ১.৬ থেকে ২.২ কেজি।

    ডিম উৎপাদন ক্ষমতা

    খাকি ক্যাম্পবেল জাতের হাঁসের ডিম পাড়ার হার অন্য হাঁসের তুলনায় বেশি। সঠিক ব্যবস্থাপনায় খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস বছরে ২৫০ থেকে ৩০০টি ডিম দেয়। প্রতিটি ডিমের গড় ওজন ৬০-৭০ গ্রাম হয়। এদের ডিম উৎপাদন ক্ষমতা জাতের ব্লাড পার্সেন্টটেজ ও ব্যবস্থাপনার উপর নির্ভর করে।

    আরো জানতে পড়ুনঃ খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস- জাতের তথ্য ও বিস্তারিত

    জিনডিং জাতের হাঁস (jinding duck)

    জিনডিং জাতের হাঁস (jinding duck) ডিম উৎপাদনের জন্য উপমহাদেশের প্রায় সকল দেশেই পালন করা হয়। এরা লবনাক্ত পরিবেশ পছন্দ করে। সমূদ্র উপকুলবর্তী এলাকায় এদের দেখতে পাওয়া যায়। এ জাতের হাঁসের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। সহজে রোগাক্রান্ত হয় না।

    ducks on green grass field
    Photo by Estiak Jahan on Pexels.com

    জিনডিং হাঁস হালকা থেকে মাঝারি আকারের হয়। মায়া হাঁসের পালক খাকি রঙের। পা ও পায়ের পাতার রং কালো। ঠোটের রং নীলাভ কালো। এদের চোখ গাঢ় বাদামী ও গড় ওজন ১.৫ থেকে ২.২ কেজি।

    জিনডিং হাঁস ডিম উৎপাদন ক্ষমতা

    জিনডিং হাঁস বছরে ২৬০ থেকে ৩২০ টি ডিম দেয়। প্রতিটি ডিমের গড় ওজন ৬৫ গ্রাম হয়। হাঁসের ডিম উৎপাদন ক্ষমতা জাতের ব্লাড পার্সেন্টটেজ ও ব্যবস্থাপনার উপর নির্ভর করে।

    ইন্ডিয়ান রানার জাতের হাঁস (Indian runner duck)

    ইন্ডিয়ান রানার জাতের হাঁস দেখতে কিছুটা পেঙ্গুইনের মত। এরা গলা উঁচু করে পেঙ্গুনের মত সোজা হয়ে দাড়িয়ে থাকে ও চলাচল করে। ইন্ডিয়ান রানার জাতের হাঁস তুলনামুলক ভালো ডিম দেয়। এদের পালকের রং প্রধানত সাদা হলেও বর্তমানে বিভিন্ন বর্ণের রানার হাঁস দেখতে পাওয়া যায়।

    indian-runner
    indian-runner

    আরো জানতে পড়ুনঃ ইন্ডিয়ান রানার হাঁস – জাতের তথ্য ও বৈশিষ্ট্য

    রানার হাঁসের ডিম উৎপাদন ক্ষমতা

    ইন্ডিয়ান রানার হাঁসের ডিম উৎপাদন ক্ষমতা খাকি ক্যাম্পবেল হাঁসের তুলনায় কম হলেও এরা বছরে ২০০ থেকে ২২০ টিডিম দেয়। ইন্ডিয়ান রানার হাঁস মূলত ডিম উৎপাদনের জন্যই পালন করা হয়।

    বেইজিং জাতের হাঁস

    পিকিন বা বেইজিং জাতের হাঁস মাংস উৎপাদনকারী হিসেবে ভীষণভাবে সমাদৃত।এদের মাংস খুব সুস্বাদু। পিকিন হাঁস আকারে বড় হলেও এদের ডিম উৎপাদন ক্ষমতা খারাপ নয়। তবে লম্বা সময় ধরে এরা ভালো ডিম দেয় না।

    beijing_duck
    beijing_duck

    আরো জানতে পড়ুনঃ বেইজিং হাঁস বা পেকিন হাঁসের তথ্য

    ডিম উৎপাদন ক্ষমতা

    বেইজিং বা পিকিন হাঁসের ডিম উৎপাদন ক্ষমতা বছরে প্রায় ১৮০-২২০ টি। অন্যান্য মাংস উৎপদনকারী হাঁসের তুলনায় পিকিন বা বেইজিং জাতের হাঁসের ডিম পাড়ার হার বেশি। আর এজন্য এই হাঁস পালনে অধীক লাভবান হওয়া যায়।

  • হাঁসের জাত পরিচিতি

    হাঁসের জাত পরিচিতি

    বিশ্বব্যাপী অনেক হাঁসের জাত থাকলেও আমাদের দেশে কয়েকটি জাত পরিলক্ষিত হয়। আমাদের দেশে প্রাপ্ত জাতগুলির বেশিরভাগই সংকরিত। কারন আমদের দেশে উম্মুক্ত পদ্ধতিতেই বেশী হাঁস পালন করা হয়। এর ফলে জাতের সঠিক বৈশিষ্ট ধরে রাখা কঠিন। তবে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে সঠিকভাবে হাঁসের জাত সংরক্ষনের চেষ্টা চলছে।

    হাঁসের জাত
    হাঁস

    হাঁস সাধারণত ডিম উৎপাদনের জন্য পালন করা হলেও মাংস উৎপাদনের জন্যও পালন করা হয়। ডিমের জন্য সবথেকে উপযুক্ত জিংডিং হাঁস। এরা বছরে প্রায় ৩০০ ডিম দিতে পারে। এছাড়াও খাকি ক্যাম্পবেলইন্ডিয়ান রানার হাঁস ডিমের জন্য বেশ জনপ্রিয়।

    বেইজিং বা পেকিন জাতের হাঁস সাধারনত মাংস উৎপাদনের জন্য পালন করা হয়। এর সাথে সাথে আমাদের দেশের গ্রামাঞ্চলে চীনা হাঁস বা মাসকোভি হাঁস পালন ব্যাপক জনপ্রিয়।

    হাঁসের বিভিন্ন জাত ও তথ্য

    জাতের নামপালনের উদ্দেশ্যবছরে ডিমের সংখ্যাশারিরিক ওজন
    খাকি ক্যাম্পবেলডিম উৎপাদন ২৫০-৩০০১.৮-২.৫ কেজি
    ইন্ডিয়ান রানারডিম উৎপাদন২৫০-৩০০১.৫-২.২ কেজি
    বেইজিং বা পিকিংমাংস+ডিম উভয়১৫০ ২.৫-৫.০ কেজি
    জিংন্ডিংডিম উৎপাদন২৫০-৩০০১.৬-২.২ কেজি
    মাস্কোভি বা চীনা হাঁসমাংস উৎপাদন১২০৩-৮ কেজি
    দেশিডিম+মাংস উভয়৮০-১২০২-২.৫ কেজি

    কোন জাতের হাঁস বেশি ডিম দেয়

    হাঁস পালনের ক্ষেত্রে সবার মনেই একটা প্রশ্ন থাকে, কোন জাতের হাঁস বেশি ডিম দেয়? এর উত্তর হচ্ছে জিংন্ডিং ও খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস। এরা প্রায় ৮৫% পর্যন্ত ডিম দিয়ে থাকে। তবে ডিমের প্রডাকশন ভালো ব্যাবস্থাপনার উপর নির্ভর করে। ইন্ডিয়ান রানার হাঁসও বেশ ভালো ডিম পারে।

  • মাসকোভি হাঁস বা চীনা হাঁস

    মাসকোভি হাঁস বা চীনা হাঁস

    মাসকোভি হাঁস বা চীনা হাঁস সারা বিশ্বেই দেখতে পাওয়া যায়। চীনা হাঁস গৃহপালিত হাঁসের মধ্যে আকারে সবথেকে বড়। এটিই একমাত্র পোষা হাঁস যা সাধারন হাঁস বা ‘ম্যালার্ড’ থেকে প্রাপ্ত নয়। বৈজ্ঞানিকভাবে এটি আসলে সত্যিকারের হাঁস নয়। তবে এটি হাঁসের খুব কাছাকাছি একটি জাত। এর বৈজ্ঞানিক নাম Cairina Moschata। এরা সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রজাতির ওয়াটার ফাউল।

    মাসকোভি হাঁস
    মাসকোভি হাঁস

    উপমহাদেশ ও ইউরোপে অনেক আগে থেকেই মাসকোভি হাঁস স্থানীয় লোকদের দ্বারা গৃহপালিত হয়েছিল। এদেরকে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়। আমাদের দেশে এটি চীনা হাঁস নামেই বেশী পরিচিত। এদেরকে মাস্কি হাঁস বা বার্বারি হাঁসের মতো আরও কিছু নামে ডাকা হয়। এরা প্রচুর মশা খায় বলে এদেরকে মাসকো হাঁসও বলা হয়।

    বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় মাস্কোভি হাঁসের আরও অনেক নাম রয়েছে। তবে মাস্কোভি হাঁসের নামটির সঠিক উৎস জানা যায়নি। ধারনা করা হয়, ‘মাসকোভি’ শব্দটি রাশিয়ার “মস্কো” থেকে নেয়া হয়েছে। তবে এটি শুধুমাত্র মস্কোর স্থানীয় কোন হাঁস নয়। গৃহপালিত মাংসের হাঁসের মধ্যে এটি পৃথিবীব্যাপী খুব বিখ্যাত।

    মাসকোভি হাঁসের শারীরিক বৈশিষ্ট্যঃ

    ভারী জাতের হাঁস হিসাবে মাসকোভি হাঁসকে তালিকাভুক্ত করা হয়। এদের প্রশস্ত পা ও সমান লেজ আছে। এদের নখর বেশ বড় ও বাকানো। শরীরের পালক কালচে পীত কালারের। এদের ডানায় সাদা পালকের সাথে সবুজাভ-কালো পালক থাকতে পারে। মুখের উপর লালচে গিট বিদ্যমান। যেটি বাচ্চা অবস্থায় না থাকলেও বয়স হলে দৃশ্যমান হয়। তবে মুখের ত্বক কালচে। পা কালো ও চোখ বাদামি।

    এদের মদ্দা বা হাঁসা গুলি মায়া হাঁসের আকারের প্রায় দ্বিগুণ। সাধারণত, মদ্দা হাঁসের দৈর্ঘ্য প্রায় 34 ইঞ্চি (86 সেমি) এবং গড় ওজন প্রায় ৪.৬ থেকে ৬.৮ কেজি। মায়া হাঁসের পালক ও গঠনও একইরকম হয় তবে এটি আকারে আরও ছোট। মায়া হাঁসের ওজন ২.৬ থেকে ৩.৬ কেজি পর্যন্ত হয়।

    মাসকোভি বা চীনা হাঁস পালনের উদ্দ্যেশ্যঃ

    চীনা বা মাসকোভি হাঁস একটি মাংস উৎপাদনশীল হাঁসের জাত হিসাবে উত্থাপিত হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এদেরকে মাংসের জন্য পালন করা হয়। তবে এদেরকে হাইব্রিড হাঁস উৎপাদনের জন্য পেকিন বা বেইজিং হাঁসের সাথে পালন করা হয়। এদের ক্রসে যে বাচ্চা হয় তা আকরে বেশ বড় হলেও এটি হিজড়া হয়। অর্থাৎ, এদের প্রজনন ক্ষমতা থাকে না।

    চিনা হাঁস পোষা হাঁস হিসেবে পৃথিবীব্যাপী সৌখিন হাঁস-খামারিদের কাছে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এদের মাংস অত্যন্ত সুস্বাদু ও ভাল মানের।

    বিশেষ নোটঃ

    মাসকোভি হাঁস আসলে হাঁস নয় বরং অনন্য এক পাখি। এরা শান্ত স্বভাবের পাখি। তবে অপরিচিত কাউকে দেখলে তেড়ে যেতে পারে। এরা হিস-হিস শ্বব্দ করে চলাফেরা করে। অন্য জাতের হাঁসের সাথে এরা মিলে থাকতে পারে। যদিও এদের ক্রসে হিজড়া বাচ্চা উৎপাদন হয়। এরা সাধারনত জোড় বাধতে পছন্দ করে। নিজ জাত না পেলে অন্য জাতের হাঁসের সাথেই এরা জোড় বাঁধে।

    মাসকোভি হাঁস বেশ ভাল উড়তে পারে এবং একবারে অনেকদূর পর্যন্ত উড়ে যেতে পারে। তাই এদের ডানা-ক্লিপ করা প্রয়োজন। বিশেষত হাঁসরা দীর্ঘ দূরত্বে উড়তে সক্ষম হয়। মাসকোভি হাঁস পালনের জন্য বেশী পানির প্রয়োজন নেই। এরা সাধারণত অন্যান্য হাঁসের জাতের মতো সাঁতার কাটে না। কারণ এদের তেল গ্রন্থিগুলি বিকাশাধীন।

    বুনো মুসকোভি হাঁস লাজুক এবং সাধারণত নীরব। গার্হস্থ্য মাসকোভিহাঁস খুব বুদ্ধিমান, কিন্তু কখনও কখনও আক্রমণাত্মক হতে পারে। কিছু লোক তাদের বুদ্ধি, স্বতন্ত্র চেহারা এবং বন্ধুত্বপূর্ণ এবং বিশ্বাসযোগ্য ব্যক্তিত্বের জন্য জাতকে প্রশংসা করে। অন্যরা তাদের অগোছালোতা, আগ্রাসন এবং ভিন্ন চেহারার জন্য তাদের অপছন্দ করে। এরা অন্য হাঁসের মত একত্রে না চলে সাধারণত ছোট ছোট দলে ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণত এরা পোকামাকড়, মাছ, পাতা, শিকড়, বীজ, ডালপালা, সরীসৃপ এবং ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী খেয়ে থাকে। এরা তেলাপোকা খুবই পছন্দ করে। এদের কাছে তেলাপোকা অনেকটা চকলেট হিসেবে বিবেচিত।

    মাসকোভি হাঁস

    মাসকোভি হাঁস দ্রুত বর্ধমানশীল হাঁস নয়। পুরোপুরি পরিণত হতে প্রায় এক বছর সময় নেয়। তবে মাংসের হাঁসের জাত হিসাবে এরা বেশ আগেই জবাইয়ের বয়সে পৌঁছে যায়। মদ্দা হাঁস প্রায়ই মর্যাদার জন্য এবং হাঁসের সাথে বংশবিস্তারের জন্য অন্যান্য মদ্দা হাঁসের সাথে লড়াই করে। এক্ষেত্রে মদ্দা হাঁস খুবই আক্রমণাত্মক হতে পারে।

    মায়া হাঁস সাদা কালারের ডিম দেয়। এরা মা হিসেবে খুবই ভালো। সাধারণত একসাথে ৮ থেকে ১৬ টি ডিম দিয়ে তা দিতে বসে। এবং প্রায় 35 দিনের জন্য ডিম পারা বাদ দেয়।

    নীচের চার্টে মাসকোভি বা চীনা হাঁসের পূর্ণ বংশের তথ্য দেয়া হলো।

    মাসকোভি বা চীনা হাঁসের তথ্য | জাতের তথ্য

    জাতের নাম: মাসকোভি। ( cairina moschata)
    অন্য নাম: মাস্কো, চীনা, বার্বারী ইত্যাদি সহ আঞ্চলিক আরো অনেক নাম বিদ্যমান।
    পালনের উদ্দ্যেশ্য: মাংস ও সৌখিনতার জন্য।
    জাতের আচরণ: শান্ত-শিষ্ট,আকর্ষনীয়,শক্ত, ধীরস্থির। মাতৃত্বস্নেহ প্রবন।
    আকার: বেশ বড়। হাঁসা প্রায় ৪.৬ থেকে ৬.৮ কেজি ও হাঁসি প্রায় ২.৬ থেকে ৩.৬ কেজি।
    তা দেয়ার প্রবনতা: সাধারন।
    জলবায়ু সহনশীলতা: সব জলবায়ু ।
    ডিম রঙ: সাদা।
    ডিমের আকার: বড়। (৬৫ গ্রাম প্রায়)
    ডিমউৎপাদনশীলতা: ১০০-১২০ ডিম/বছর
    বৈচিত্র্য:কালো,সবুজাভ কালো, নীল, সাদা, চকলেট সহ কয়েকটি রঙ
    মূল দেশ:আমেরিকা, ব্রাজিল, ইউরোপ।
  • বেইজিং হাঁস বা পেকিন হাঁসের তথ্য

    বেইজিং হাঁস বা পেকিন হাঁসের তথ্য

    বেইজিং হাঁস একটি জনপ্রিয় প্রাচীন হাঁসের জাত। এটি প্রথম চীনে ডেভেলপ হয়েছিল। বর্তমানে এটি অন্যতম বাণিজ্যিক হাঁসের জাত। বেইজিং হাঁস আরও কিছু নামে পরিচিত, যেমন আমেরিকান পেকিন হাঁস, লং-আইল্যান্ড হাঁস ইত্যাদি।

    ১৮০০ এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে এই জাতটি পশ্চিমা বিশ্বে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর থেকেই এটি দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে। বর্তমানে বেইজিং বা পেকিন হাঁস আমেরিকার সর্বাধিক জনপ্রিয় বাণিজ্যিক হাঁসের জাত। যথেষ্ট ডিম দেওয়ার ক্ষমতা ও সুস্বাদু মাংসের কারনে বেইজিং হাঁস বিশ্বজুড়ে খুব জনপ্রিয় এবং উপলভ্য।

    beijing_duck
    beijing_duck

    বেইজিং হাঁসের শারীরিক বৈশিষ্ট্য

    বেইজিং হাঁসের শারিরিক গঠন খুব সুন্দর। এরা ভারী জাতের শ্রেণিতে রয়েছে। এদের দীর্ঘ দেহ এবং বেশ দীর্ঘ ঘাড় রয়েছে। এদের বুকে যথেষ্ট মাংস থাকে এবং ত্বক হলুদ। পালক সাদা বা ক্রিমযুক্ত সাদা রঙের হয়।

    এদের পাগুলি লালচে বা কমলা-হলুদ রঙের। ডানার আকার ছোট থাকে। গড় ওজন ২.৪ থেকে ৩.৫ কেজি হয়। তবে বানিজ্যিকভাবে ও সথিক পরিচর্যায় এদের ওজন আরো বেশী হতে পারে (৪-৫কেজি)।

    পালনের উদ্দ্যেশ্যঃ

    পেকিন হাঁস একটি ‘দ্বৈত উদ্দেশ্য’বা ‘ডুয়াল পারপাজ’ হাঁসের জাত। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এদেরকে মাংস উৎপাদনের জন্য পালন করা হয়। বানিজ্যিক ভাবে মাংস উৎপাদনের জন্য এরাই বিশ্বব্যাপী সর্বাধিক জনপ্রিয়। তবে জাতটি ডিম উৎপাদনের জন্যও উপযুক্ত। বছরে এরা প্রায় ২৫০ টি ডিম দিতে পারে।

    বেইজিং হাঁস পালন

    বেইজিং হাঁস ভালো মানের মাংস উৎপাদন ও পাশাপাশি ডিম উৎপাদনের জন্য প্রসিদ্ধ। বছরে এরা প্রায় ২৫০ টি ডিম দিতে পারে। বিরক্ত না করা হলে পেকিন হাঁস তেমন ব্রুডি হয় না।

    পেকিন হাঁস বেশ বুদ্ধিমান ও সতর্ক পাখি। এদের কাছাকাছি যে কোনো শিকারী সম্পর্কে অন্যকে সতর্ক করার জন্য তারা উচ্চস্বরে কাঁপবে।

    অন্যান্য মাংসের হাঁসের জাতের তুলনায় এরা দ্রুত বৃদ্ধি পায়। পেকিন হাঁস বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ। এরা পোষা প্রাণী হিসাবে খুব ভাল। সাধারনত এরা বেশ দীর্ঘ আয়ু পায়। এদের গড় আয়ু প্রায় ৯-১২ বছর। কিছু হাঁস আরো বেশি দিন বাঁচে।

    নিম্নলিখিত চার্টে বেইজিং হাঁসের সম্পূর্ণ প্রোফাইল বর্নণা করা হলো।

    বেইজিং হাঁস | জাতের তথ্য বা প্রোফাইল

    জাতের নাম: পেকিং বা পিকিং।
    অন্য নাম: বেইজিং, আমেরিকান পেকিন।
    পালনের উদ্দ্যেশ্য: মাংস ডিম উভয়।
    জাতের আচরণ: শান্ত, আকর্ষনীয়, পোষা প্রাণী হিসেবে ভাল।
    আকার: বড় । সাধারণত ২.৪ থেকে ৫.১ কেজি।
    তা দেয়ার প্রবনতা: সাধারন।
    জলবায়ু সহনশীলতা: সব জলবায়ু ।
    ডিম রঙ: সাদা, মিশ্রিত সাদা।
    ডিমের আকার: বড়। (৯০-১০০ গ্রাম প্রায়)
    ডিমউৎপাদনশীলতা: সাধারণ (প্রায় ২০০-২৫০ ডিম/বছর)
    বৈচিত্র্য: শুধুমাত্র সাদা।
    মূল দেশ: চীন।
    টেবিলঃ বেইজিং বা পেকিন হাঁসের তথ্য

    বেইজিং হাঁস পালনের সুবিধাঃ

    • এরা খুব দ্রুত বাড়ে।
    • এদের বুকের মাংসের সাইজ বড়।
    • এসের ডিম বেশ বড় ও সুস্বাদু।
    • ২-৩ বছর বয়স পর্যন্ত ডিম দেয়।
    • ডিম উৎপাদন কমে গেলে ২ বছর পর হাঁসগুলো মাংস হিসেবে বাজারে বিক্রি করা যায়।
    • খুব দ্রুত এডাল্ট হয়। মাত্র সাড়ে তিন মাসেই ডিমে আসতে পারে।
    • অন্য জাতের হাঁসের সাথে একত্রেই পালন করা যায়।

    আরো পড়ুন..

    ফাউমি মুরগি সম্পর্কে দরকারী তথ্য

    সোনালি মুরগির খাবার তৈরি

    কোয়েল পাখির খাবার তৈরি

    কাদাখনাথ মুরগি

  • ইন্ডিয়ান রানার হাঁস – জাতের তথ্য ও বৈশিষ্ট্য

    ইন্ডিয়ান রানার হাঁস – জাতের তথ্য ও বৈশিষ্ট্য

    ইন্ডিয়ান রানার হাঁস একটি হালকা জাতের হাঁস। যদিও এদের নাম ‘ইন্ডিয়ান রানার’, তবে এর নির্ভরযোগ্য এমন কোন তথ্য নেই যে তারা ইন্ডিয়া বা ভারত থেকেই এসেছে। ভারতীয় উপমহাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ান দ্বীপপুঞ্জে জাতটির প্রাচীন অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এর নামকরনে সম্ভবত, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ‘ইন্ডিয়া-ম্যান’ জাহাজ বা জাহাজের বন্দরকে বোঝানোর জন্য ‘ইন্ডিয়ান’ শব্দটি নেয়া হতে পারে। আমেরিকা ও ইউরোপে আমদানি করা অন্যান্য অনেক জাতের ক্ষেত্রে এই ধরনের নামকরন দেখাতে পাওয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ, মাস্কোভি হাঁস। (যা আসলে মস্কো শহর থেকে নেয়া হয়নি)

    ইন্ডিয়ান-রানার-হাঁস
    ছবিঃ রানার হাঁস

    ইন্ডিয়ান রানার হাঁসের প্রাচীন ‘জাওয়ান মন্দিরের’ কবর দ্বারা প্রমাণিত একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। যা ইঙ্গিত দেয় যে প্রায় 2000 বছর আগেও ইন্দো চীনে ভারতীয় রানার হাঁসের অস্তিত্ব ছিল। এই এলাকায় শত শত বছর ধরে হাঁস পালন করা হয়েছে। তারা তাদের হাঁসকে শস্য-ফসলি জমিতে চড়ানোর প্রশিক্ষণ দেয় এবং আগাছা বীজ, কীটপতঙ্গ, লার্ভা, গোলাগুলি, ছোট সরীসৃপ ইত্যাদি সন্ধান করে।

    ১৯ শতকের শেষ দিকে ইন্ডিয়ান রানার হাঁস ইউরোপ ও আমেরিকায় বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠে। তখন এটি পেঙ্গুইন এর মত চলার কারণে ‘পেঙ্গুইন ডাক’ নামে পরিচিত ছিল। জাতটি ব্রিটিশ ওয়াটারফাউল স্ট্যান্ডার্ড এবং আমেরিকান পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন অফ পারফেকশন উভয় দ্বারা স্বীকৃত।

    বর্তমানে রানার হাঁস প্রধানত ডিম উত্পাদনের জন্য পালন করা হয়। এদের থেকে অনেক আধুনিক হাঁসের জাত তৈরি করা হয়েছে। আবাকোট রেঞ্জার, খাকি ক্যাম্পবেল, ওয়েলস হারলেকিন ইত্যাদি ভাল উদাহরণ।

    ইন্ডিয়ান রানার হাঁসের বৈশিষ্ট্য

    ইন্ডিয়ান রানার হচ্ছে সুন্দর পালনযোগ্য জাতের হাঁস। এদের পাতলা শরীর এবং লম্বা ঘাড় আছে। এদের চোখে চোখ রেখে হালকা মাথা আছে এবং পিঠ সোজা। ভারতীয় রানার হাঁসের পা তাদের শরীরের নিচের দিকে,যার ফলে প্রজননতন্ত্র নিচের অবস্থান লক্ষনীয়।

    কিছু রানার হাঁস যখন উত্তেজিত হয় তখন এরা সম্পূর্ণরূপে সোজা দাঁড়াতে পারে। এদের উচ্চতা (মাথা থেকে লেজ টিপ পর্যন্ত) মদ্দা 50 সেন্টিমিটার (20 ইঞ্চি) আর মায়া হাঁস 76 সেন্টিমিটার (30 ইঞ্চি) পর্যন্ত হয়ে থাকে। মদ্দা হাঁসের লেজ কিছুটা টিকি মতন থাকে। কিন্তু পূর্ণবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত মায়া ও মদ্দা হাঁস নির্ধারণ করা খুব কঠিন।

    ইন্ডিয়ান-রানার-হাঁস

    গৃহপালিত যত রকমের হাঁস আছে তার মধ্যে সবথেকে বেশি কালার বৈচিত্র দেখা যায় এই হাঁসের মধ্যে । সাধারনত ৮ রঙের হাঁসের বৈচিত্র বেশি দেখা যায়। তবে ১৪ রঙের ইন্ডিয়ান রানার হাঁস ব্রিটিশ ওয়াটারফ্লল স্ট্যান্ডার্ডগুলি দ্বারা স্বীকৃত। এর স্বীকৃত বর্ণ বৈচিত্র্য কালো, বাফ, চকোলেট, কুম্বল্ল্যান্ড ব্লু, ফাওন, গ্রে, পেনসিল, হোয়াইট। ভারতীয় রানার হাঁসের গড় শরীরের ওজন 1.4 থেকে 2 কেজি। এবং drakes হাঁসের চেয়ে সামান্য বড়। ড্র্যাকের গড় শরীরের ওজন 1.6 এবং 2.3 কেজি।

    ভারতীয় রানার হাঁস অনেক উদ্দেশ্যেই পালিত হয়ে থাকে। এরা বেশ লম্বা সময় ধরে ডিম দেয় এবং এদের প্রজনন ক্ষমতাও ভালো। সৌখিন ভাবে ও জৈব কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণের জন্যেও এদের পালন করা হয়।

    জাতের তথ্য

    ইন্ডিয়ান রানার একটি চমৎকার গৃহস্থ হাঁস। এরা খুব চঞ্চল ও সক্রিয়। যার ফলে অন্যান্য হাঁসের তুললনায় জৈব কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণের জন্য এরা বেশ দক্ষ।

    সম্প্রতি চিন ও পাকিস্তানে পংগপাল নিয়ন্ত্রনে এই জাতের হাঁস কার্যকরি ভুমিকা রাখে।

    রানার হাঁস একটি ভালো ডিম পারা জাত। এরা বছরে প্রায় 250 ডিম পারে। সুন্দর পরিচর্যা ও ভালো হাঁস বাছাই করে রাখলে এদের থকে বছরে প্রায় ৩০০ এর উপর ডিম পাওয়া যায়। এদের ডিমের রং বিভিন্ন হতে পারে, তবে অদিকাংশই রঙিন সবুজ-সাদা।

    সাধারণত অন্যান্য হাঁসের তুলনায় এদের কম পানি প্রয়োজন। পুকুর ছাড়াই রানার হাঁস পালন করা যায়। ইন্ডিয়ান রানার হাসের গড় জীবদ্দশা প্রায় 8-12 বছর।

    ইন্ডিয়ান-রানার-হাঁস

    ইন্ডিয়ান রানার হাঁস | জাতের তথ্য বা প্রোফাইল

    জাতের নাম: ইন্ডিয়ান রানার ।
    অন্য নাম: পেংগুইন হাঁস, রানার।
    পালনের উদ্দ্যেশ্য: ডিমের জন্য, কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ।
    জাতের আচরণ: শান্ত,আকর্ষনীয়,শক্ত, বন্ধুত্বপূর্ণ ।
    আকার: মাঝারি। সাধারণত ১.৫ থেকে ২.৩ কেজি।
    তা দেয়ার প্রবনতা: সাধারন।
    জলবায়ু সহনশীলতা: সব জলবায়ু।
    ডিম রঙ: সাদা, সবুজাভ সাদা।
    ডিমের আকার: বড়।(৬৫-৮০ গ্রাম প্রায়)
    ডিমউৎপাদনশীলতা: ভাল (প্রায় ৩০০ ডিম/বছর)
    বৈচিত্র্যঅনেক রঙ জাতের মধ্যে প্রদর্শিত হয়।
    মূল দেশ: ভারত,তবে অনেকের মতেই ইন্দোনেশিয়ার উপদ্বীপে।
    টেবিলঃ ইনন্ডিয়ান রানার হাঁস
  • খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস- জাতের তথ্য ও বিস্তারিত

    খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস- জাতের তথ্য ও বিস্তারিত

    খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস হচ্ছে ডিমের জন্য পৃথিবী বিখ্যাত ও জনপ্রিয়। এটি প্রাচীন একটি হাঁসের জাত যা ১৮৯৮ সালের দিকে ইংল্যান্ডে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছিল। ইংল্যান্ডের গ্লুস্টারস্টারশায়ারে ‘মিসেস অ্যাডেল ক্যাম্পবেল‘ নামক এক মহিলা সর্বপ্রথম খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস ডেভেলপ করেছিলেন বলে জানা যায়।

    তিনি মূলত ভালো মানের কিছু ইন্ডিয়ান রানার হাঁস এবং অন্যান্য আঞ্চলিক কিছু হাঁসের সাথে ক্রস করে জাতটি ডেভেলপ করেছিলেন। তার নামেই মূলত এটির ক্যাম্পবেল নামকরন করা হয়েছে। এভাবেই ইন্ডিয়ান রানার হাঁস, ক্যাম্পবেল হাঁসের উন্নয়ন ভিত্তি গঠন করে।

    ব্রিটিশ সেনা ইউনিফর্মের কালার খাকি রঙের, তাই এটির সাথে মিল রেখে মিসেস ক্যাম্পবেল, হাঁসের এই নতুন জাতটিকে ‘খাকি ক্যাম্পবেল’ নাম দিয়েছিলেন। ১৯২৪ সালে যুক্তরাজ্যের পোল্ট্রি ক্লাবের মানদণ্ডে এদেরকে নথিভুক্তকরা হয়। এবং ১৯৪১ সালে আমেরিকান পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের পরিপূর্ণতার মানদণ্ডে গৃহিত হয়।

    খাকি-ক্যাম্পবেল-হাঁস
    ছবিঃ খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস

    বৃটিশরাই প্রথম জাতটিকে আমাদের উপমহাদেশে নিয়ে আসে। এখানকার পরিবেশে জাতটি ভালোভাবেই খাপ খাইয়ে নেয় এবং দ্রুতই জনপ্রিয়তা লাভ করে। এই জাতটি বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ডিমের জাতগুলির মধ্যে একটি। এদেরকে সারা বিশ্বব্যাপী দেখতে পাওয়া যায়।

    একসময় খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস জাতের স্বতন্ত্রতা বজায় রাখলেও বর্তমানে এটি আমাদের দেশি হাঁসের সাথে মিশে এদের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট হারিয়ে ফেলে। হাঁস সাধারনত খোলা মাঠে চড়ে বেড়ায় বলে এর স্বতন্ত্রতা ধরে রাখা বেশ কঠিন। বাংলাদেশের সরকারি হাঁস-খামার গুলিতে জাতটি সংরক্ষনের চেষ্টা চলছে।

    খাকি ক্যাম্পবেল হাঁসের বৈশিষ্ট্য

    খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস মাঝারি আকারের। মায়া হাঁসের পালকের রং খাকি, মাথা এবং ঘাড় ব্রোঞ্জ রঙের। পা ও পায়ের পাতার রং কালো। মদ্দা হাঁসের সবুজ পিঠ, সমৃদ্ধ গাঢ় কমলা পা ও গাঢ় বাদামী চোখ আছে।মায়া হাঁসের ঠোটের রং কালো হলেও মদ্দা হাঁসের ঠোটের রং নীলাভ কালো। এদের চোখ গাঢ় বাদামী ও গড় ওজন ১.৫ থেকে ২.২ কেজি।

    খাকি-ক্যাম্পবেল-হাঁস
    ছবিঃ খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস

    খাকি ক্যাম্পবেল বেশ শান্ত, সক্রিয় এবং সহনশীল জাতের একটি হাঁস। এরা বেশ চঞ্চল ও চড়ে বেড়ানো জাত হিসেবে সুখ্যাতি আছে। চারণভূমিতে চড়ে খাওয়ার জন্য এদের বেশ জায়গা প্রয়োজন। প্রায় সব ধরনের জলবায়ুতেই এরা ভালভাবেই খাপ খাইয়ে নিতে পারে।

    এদের অসাধারণ ডিম দেয়ার ক্ষমতা আছে। সাধারণত এরা ৫ বয়স থেকে ডিম দেয়া শুরু করে। এবং গড়ে একটি হাঁস প্রতি বছর প্রায় ৩০০ ডিম দিতে পারে। অবশ্যই পালনের উপর ভিত্তি করে ডিমের পরিমান আরো বাড়তে বা কমতেও পারে। ডিমের রং হালকা সাদা বা সবুজাভ-সাদা এবং সুন্দর গঠন।

    পালনের উদ্দ্যেশ্যঃ

    বেশিরভাগ খামারী ডিম উৎপাদনের জন্য খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস পালন করে থাকে। যদিও এদের মাংসের স্বাদ চমৎকার। তবে ডিমের উৎপাদনের জন্যই এরা সর্বাধিক জনপ্রিয়। বাণিজ্যিকভাবে হাঁসের ডিম উৎপাদনের জন্য জাতটি উপযুক্ত।

    এছাড়াও মাংসের জন্য এদেরকে পালন করা হয়। ডিমের উদ্দেশ্যে এ জাতের হাঁস পালন করা হলেও ডিম পাড়ার পর একে মাংসের জন্য ব্যবহার করা যায়।

    বিশেষ নোট

    খাকি ক্যাম্পবেল বেশ কষ্টসহিষ্ণু জাতের হাঁস। এদের পালন করতে বেশি পানির প্রয়োজন হয় না। কেবল খাবার ও গলা ডোবানোর জন্য প্রয়োজনীয় পানি পেলেই এরা সহজ ও স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকতে পারে। তাই পুকুর ডোবা বা জলাশয় না থাকলেও সম্পূর্ণ আবদ্ধ অবস্থায় এদেরকে পালন করা সম্ভব।

    খাকি-ক্যাম্পবেল-হাঁস
    ছবিঃ খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস

    নিম্নলিখিত চার্টে খাকি ক্যাম্পবেল হাঁসের সম্পূর্ণ প্রোফাইল বর্নণা করা হলো।

    খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস | জাতের তথ্য বা প্রোফাইল

    জাতের নাম: খাকি ক্যাম্পবেল ।
    পালনের উদ্দ্যেশ্য: ডিমের জন্য।
    জাতের আচরণ: শান্ত ,আকর্ষনীয়,শক্ত, বন্ধুত্বপূর্ণ ।
    আকার: মাঝারি। সাধারণত ১.৪ থেকে ২.২ কেজি।
    তা দেয়ার প্রবনতা: সাধারন।
    জলবায়ু সহনশীলতা: সব জলবায়ু ।
    ডিম রঙ: সবুজাভ -সাদা, মিশ্রিত সাদা।
    ডিমের আকার: বড়। (৭০ গ্রাম প্রায়)
    ডিমউৎপাদনশীলতা: ভাল (প্রায় ৩০০ ডিম/বছর)
    বৈচিত্র্য:খাকি রঙের।
    মূল দেশ: ইংল্যান্ড।
    টেবিলঃ খাকি ক্যম্পবেল হাঁসের তথ্য

    খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস পালনের সুবিধাঃ

    • ২-৩ বছর বয়স পর্যন্ত ডিম দেয়।
    • হাঁসের ডিম সুস্বাদু। সবাই খেতে পছন্দ করেন।
    • হাঁসের বাচ্চার দাম কম।
    • এদের ডিমের সাইজ বড়।
    • ডিম উৎপাদন কমে গেলে ৩ বছর পর হাঁসগুলো মাংস হিসেবে বাজারে বিক্রি করা যাবে। হাঁসের মাংস মুরগির চেয়ে সুস্বাদু।
    • হাঁস রাতে ডিম পাড়া শেষ করে। ফলে নজরদারির খরচ কম লাগে।
    • এরা ১৭-১৮ সপ্তাহ বয়সেই ডিম দেয়।

    আরো পড়ুন…

    মাসকোভি হাঁস বা চীনা হাঁস

    বেইজিং হাঁস বা পেকিন হাঁসের তথ্য

    ইন্ডিয়ান রানার হাঁস – জাতের তথ্য ও বৈশিষ্ট্য