বেইজিং হাঁস বা পেকিন হাঁসের তথ্য

বেইজিং হাঁস একটি জনপ্রিয় প্রাচীন হাঁসের জাত। এটি প্রথম চীনে ডেভেলপ হয়েছিল। বর্তমানে এটি অন্যতম বাণিজ্যিক হাঁসের জাত। বেইজিং হাঁস আরও কিছু নামে পরিচিত, যেমন আমেরিকান পেকিন হাঁস, লং-আইল্যান্ড হাঁস ইত্যাদি।

১৮০০ এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে এই জাতটি পশ্চিমা বিশ্বে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর থেকেই এটি দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে। বর্তমানে বেইজিং বা পেকিন হাঁস আমেরিকার সর্বাধিক জনপ্রিয় বাণিজ্যিক হাঁসের জাত। যথেষ্ট ডিম দেওয়ার ক্ষমতা ও সুস্বাদু মাংসের কারনে বেইজিং হাঁস বিশ্বজুড়ে খুব জনপ্রিয় এবং উপলভ্য।

beijing_duck
beijing_duck

বেইজিং হাঁসের শারীরিক বৈশিষ্ট্য

বেইজিং হাঁসের শারিরিক গঠন খুব সুন্দর। এরা ভারী জাতের শ্রেণিতে রয়েছে। এদের দীর্ঘ দেহ এবং বেশ দীর্ঘ ঘাড় রয়েছে। এদের বুকে যথেষ্ট মাংস থাকে এবং ত্বক হলুদ। পালক সাদা বা ক্রিমযুক্ত সাদা রঙের হয়।

এদের পাগুলি লালচে বা কমলা-হলুদ রঙের। ডানার আকার ছোট থাকে। গড় ওজন ২.৪ থেকে ৩.৫ কেজি হয়। তবে বানিজ্যিকভাবে ও সথিক পরিচর্যায় এদের ওজন আরো বেশী হতে পারে (৪-৫কেজি)।

পালনের উদ্দ্যেশ্যঃ

পেকিন হাঁস একটি ‘দ্বৈত উদ্দেশ্য’বা ‘ডুয়াল পারপাজ’ হাঁসের জাত। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এদেরকে মাংস উৎপাদনের জন্য পালন করা হয়। বানিজ্যিক ভাবে মাংস উৎপাদনের জন্য এরাই বিশ্বব্যাপী সর্বাধিক জনপ্রিয়। তবে জাতটি ডিম উৎপাদনের জন্যও উপযুক্ত। বছরে এরা প্রায় ২৫০ টি ডিম দিতে পারে।

বেইজিং হাঁস পালন

বেইজিং হাঁস ভালো মানের মাংস উৎপাদন ও পাশাপাশি ডিম উৎপাদনের জন্য প্রসিদ্ধ। বছরে এরা প্রায় ২৫০ টি ডিম দিতে পারে। বিরক্ত না করা হলে পেকিন হাঁস তেমন ব্রুডি হয় না।

পেকিন হাঁস বেশ বুদ্ধিমান ও সতর্ক পাখি। এদের কাছাকাছি যে কোনো শিকারী সম্পর্কে অন্যকে সতর্ক করার জন্য তারা উচ্চস্বরে কাঁপবে।

অন্যান্য মাংসের হাঁসের জাতের তুলনায় এরা দ্রুত বৃদ্ধি পায়। পেকিন হাঁস বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ। এরা পোষা প্রাণী হিসাবে খুব ভাল। সাধারনত এরা বেশ দীর্ঘ আয়ু পায়। এদের গড় আয়ু প্রায় ৯-১২ বছর। কিছু হাঁস আরো বেশি দিন বাঁচে।

নিম্নলিখিত চার্টে বেইজিং হাঁসের সম্পূর্ণ প্রোফাইল বর্নণা করা হলো।

বেইজিং হাঁস | জাতের তথ্য বা প্রোফাইল

জাতের নাম: পেকিং বা পিকিং।
অন্য নাম: বেইজিং, আমেরিকান পেকিন।
পালনের উদ্দ্যেশ্য: মাংস ডিম উভয়।
জাতের আচরণ: শান্ত, আকর্ষনীয়, পোষা প্রাণী হিসেবে ভাল।
আকার: বড় । সাধারণত ২.৪ থেকে ৫.১ কেজি।
তা দেয়ার প্রবনতা: সাধারন।
জলবায়ু সহনশীলতা: সব জলবায়ু ।
ডিম রঙ: সাদা, মিশ্রিত সাদা।
ডিমের আকার: বড়। (৯০-১০০ গ্রাম প্রায়)
ডিমউৎপাদনশীলতা: সাধারণ (প্রায় ২০০-২৫০ ডিম/বছর)
বৈচিত্র্য: শুধুমাত্র সাদা।
মূল দেশ: চীন।
টেবিলঃ বেইজিং বা পেকিন হাঁসের তথ্য

বেইজিং হাঁস পালনের সুবিধাঃ

  • এরা খুব দ্রুত বাড়ে।
  • এদের বুকের মাংসের সাইজ বড়।
  • এসের ডিম বেশ বড় ও সুস্বাদু।
  • ২-৩ বছর বয়স পর্যন্ত ডিম দেয়।
  • ডিম উৎপাদন কমে গেলে ২ বছর পর হাঁসগুলো মাংস হিসেবে বাজারে বিক্রি করা যায়।
  • খুব দ্রুত এডাল্ট হয়। মাত্র সাড়ে তিন মাসেই ডিমে আসতে পারে।
  • অন্য জাতের হাঁসের সাথে একত্রেই পালন করা যায়।

আরো পড়ুন..

ফাউমি মুরগি সম্পর্কে দরকারী তথ্য

সোনালি মুরগির খাবার তৈরি

কোয়েল পাখির খাবার তৈরি

কাদাখনাথ মুরগি

Leave a Comment