Category: চিনা হাঁস

চিনা হাঁস একটি জনপ্রিয় হাঁসের প্রজাতি। এদেরকে ডিম এবং মাংসের জন্য পালন করা হয়। চিনা হাঁসের দেহ সোজা, শক্তিশালী এবং গা কালচে পিত রঙের হয়ে থাকে। চিনা হাঁসের ডিম এবং মাংস উভয়ই উচ্চ প্রোটিন মান সম্পন্ন এবং স্বাস্থ্যকর। চিনা হাঁসের প্রজনন ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে ভালো।

  • চিনা হাঁস কত দিনে ডিম দেয় -জানুন বিস্তারিত

    চিনা হাঁস (Muscovy Duck) একটি জনপ্রিয় হাঁসের প্রজাতি, যা তার মাংস, ডিম এবং সৌন্দর্যের জন্য পালন করা হয়। এই হাঁসের ডিম উৎপাদন ক্ষমতা এবং ডিম দেওয়ার সময়সূচী সম্পর্কে জানা খামারিদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ব্লগে আমরা চিনা হাঁস কত দিনে ডিম দেয়, ডিম দেওয়ার প্রক্রিয়া, এবং ডিম উৎপাদন বাড়ানোর উপায় নিয়ে আলোচনা করব।


    চিনা হাঁস কত দিনে ডিম দেয়?

    চিনা হাঁস সাধারণত ৫-৬ মাস বয়সে ডিম দেওয়া শুরু করে। তবে এই সময় হাঁসের প্রজাতি, খাদ্য, পরিবেশ এবং যত্নের উপর নির্ভর করে কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে হাঁস ৪ মাস বয়সেই ডিম দেওয়া শুরু করতে পারে, আবার কিছু ক্ষেত্রে ৭-৮ মাস সময়ও লাগতে পারে।

    ডিম দেওয়ার সময়সূচী:

    • প্রথম ডিম: ৫-৬ মাস বয়সে।
    • ডিম দেওয়ার মৌসুম: সাধারণত বসন্ত এবং গ্রীষ্মকালে (ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই) হাঁস বেশি ডিম দেয়।
    • ডিম দেওয়ার ফ্রিকোয়েন্সি: চিনা হাঁস সপ্তাহে ৩-৫টি ডিম দিতে পারে।

    চিনা হাঁসের ডিম দেওয়ার প্রক্রিয়া

    বাসা তৈরি:

      • হাঁস ডিম দেওয়ার জন্য একটি নিরাপদ এবং আরামদায়ক জায়গা বেছে নেয়।
      • খামারে হাঁসের জন্য বাসা তৈরি করে দিলে তারা সহজে ডিম দেয়।

      ডিম দেওয়ার সময়:

        • হাঁস সাধারণত সকালে বা সন্ধ্যায় ডিম দেয়।
        • একটি হাঁস একবারে ৮-১৫টি ডিম দিতে পারে।

        ডিমে তা দেওয়া:

          • চিনা হাঁস ডিমে তা দিতে পারে। ডিম ফুটতে সাধারণত ৩৫ দিন সময় লাগে।

          চিনা হাঁসের ডিম উৎপাদন বাড়ানোর উপায়

          সুষম খাদ্য প্রদান:

            • হাঁসকে উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার (যেমন: ভুট্টা, গম, সয়াবিন) প্রদান করুন।
            • খাবারে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিনের পরিমাণ বাড়ান (যেমন: ঝিনুকের খোলা, হাড়ের গুঁড়ো)।

            পর্যাপ্ত আলো এবং বায়ুচলাচল:

              • হাঁসের ঘরে পর্যাপ্ত আলো এবং বায়ুচলাচলের ব্যবস্থা রাখুন।
              • দিনে কমপক্ষে ১৪-১৬ ঘন্টা আলো প্রদান করুন।

              পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ:

                • হাঁসের ঘর এবং আশেপাশের পরিবেশ পরিষ্কার রাখুন।
                • নিয়মিত পানি পরিবর্তন করুন।

                স্ট্রেস মুক্ত পরিবেশ:

                  • হাঁসকে শান্ত এবং স্ট্রেস মুক্ত পরিবেশে রাখুন।
                  • অতিরিক্ত শব্দ বা ভিড় এড়িয়ে চলুন।

                  নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা:

                    • হাঁসের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন এবং প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন দিন।

                    চিনা হাঁসের ডিমের বৈশিষ্ট্য

                    • আকার: চিনা হাঁসের ডিম সাধারণত মুরগির ডিমের চেয়ে বড় হয়।
                    • রং: ডিমের রং সাদা বা হালকা ক্রিম রঙের হয়।
                    • পুষ্টিগুণ: চিনা হাঁসের ডিমে উচ্চ পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন এবং মিনারেল থাকে।

                    উপসংহার

                    চিনা হাঁস সাধারণত ৫-৬ মাস বয়সে ডিম দেওয়া শুরু করে এবং সঠিক যত্ন ও পরিচর্যা পেলে তারা নিয়মিত ডিম দেয়। হাঁসের ডিম উৎপাদন বাড়াতে সুষম খাদ্য, পরিষ্কার পরিবেশ এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চিনা হাঁস পালন করে আপনি সহজেই ডিম এবং মাংস উৎপাদন করে লাভবান হতে পারেন।

                    মনে রাখবেন, সঠিক যত্নই হাঁসের উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর চাবিকাঠি!

                  1. চিনা হাঁসের আয়ুষ্কাল: চিনা হাঁস কত বছর বাঁচে এবং কীভাবে তাদের আয়ু বাড়ানো যায়?

                    চিনা হাঁসের আয়ুষ্কাল: চিনা হাঁস কত বছর বাঁচে এবং কীভাবে তাদের আয়ু বাড়ানো যায়?

                    চিনা হাঁস (Muscovy Duck) একটি অনন্য ও জনপ্রিয় হাঁসের জাত, যা প্রধানত দক্ষিণ আমেরিকা, মধ্য আমেরিকা এবং বিভিন্ন উষ্ণ অঞ্চলে দেখা যায়। এই হাঁসদের জীবনকাল পরিবেশ, যত্ন ও খাদ্যাভ্যাসের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে। তবে সাধারণভাবে, চিনা হাঁস দীর্ঘ জীবনযাপনকারী হাঁসদের মধ্যে একটি।

                    চিনা হাঁস কত বছর বাঁচে?

                    চিনা হাঁস সাধারণত ৮ থেকে ১২ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে, তবে সঠিক যত্ন ও নিরাপদ পরিবেশ পেলে তাদের আয়ু ১৫ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত হতে পারে। পোষা চিনা হাঁস সাধারণত বন্য চিনা হাঁসের তুলনায় বেশি বছর বাঁচে কারণ তারা শিকারী প্রাণী ও প্রতিকূল আবহাওয়া থেকে সুরক্ষিত থাকে।

                    প্রাকৃতিক পরিবেশে চিনা হাঁস সাধারণত ৮ থেকে ১২ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে। তবে ভালো যত্ন, সঠিক পুষ্টি ও নিরাপদ আশ্রয়ের মাধ্যমে এদের আয়ু ১৫ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত হতে পারে।

                    চিনা হাঁসের আয়ু নির্ভর করে যেসব বিষয়ের উপর

                    ১. পরিবেশ ও আবাসস্থল – চিনা হাঁসদের মুক্তভাবে থাকার সুযোগ থাকলে ও নিরাপদ পরিবেশ পেলে তারা দীর্ঘদিন বাঁচে।
                    2. খাদ্য ও পুষ্টি – পুষ্টিকর খাবার যেমন শস্য, পোকামাকড়, সবুজ শাকসবজি ইত্যাদি এদের সুস্থ রাখে এবং আয়ু বাড়াতে সাহায্য করে।
                    3. চিকিৎসা ও যত্ন – নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, টিকা ও ভালো পরিচর্যা হাঁসের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং তাদের দীর্ঘজীবী হতে সাহায্য করে।
                    4. শিকারী ও বিপদ – বন্য প্রাণী, কুকুর বা অন্যান্য শিকারীর আক্রমণ থেকে নিরাপদ থাকলে এদের আয়ু দীর্ঘ হয়।

                    চিনা হাঁসের জীবনকাল কীভাবে বাড়ানো যায়?

                    চিনা হাঁসের আয়ু বাড়ানোর জন্য নিচের কিছু টিপস অনুসরণ করা যেতে পারে:

                    • পুষ্টিকর খাবার ও বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিত করা।
                    • পরিচ্ছন্ন ও আরামদায়ক আশ্রয়স্থল তৈরি করা।
                    • নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা ও প্রয়োজনীয় টিকা দেওয়া।
                    • শিকারীদের হাত থেকে রক্ষা করার ব্যবস্থা করা।
                    • তাদের পর্যাপ্ত জায়গা দেওয়া যাতে তারা মুক্তভাবে চলাফেরা করতে পারে।

                    পোষা ও বন্য চিনা হাঁসের মধ্যে পার্থক্য

                    পোষা চিনা হাঁস সাধারণত ১৫-২০ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে, কারণ তারা উন্নত খাবার ও নিরাপত্তা পায়। অন্যদিকে, বন্য চিনা হাঁসের জীবনকাল তুলনামূলক কম হয়, সাধারণত ৮-১২ বছর, কারণ তারা খাদ্য সংকট, আবহাওয়া পরিবর্তন, রোগ ও শিকারীদের আক্রমণের মুখোমুখি হয়।

                    উপসংহার

                    চিনা হাঁস একটি দীর্ঘজীবী হাঁসের জাত, যা সঠিক পরিচর্যা ও যত্ন পেলে অনেক বছর বাঁচতে পারে। যারা চিনা হাঁস পালন করতে চান, তাদের উচিত এদের জন্য একটি নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি করা, যাতে তারা সুস্থ ও দীর্ঘায়ু হয়।

                  2. বাণিজ্যিকভাবে চীনা হাঁস পালন পদ্ধতি

                    বাণিজ্যিকভাবে চীনা হাঁস পালন পদ্ধতি

                    বাণিজ্যিক মাসকোভি বা চীনা হাঁস পালনের ব্যবসা শুরু করা সহজ। কারণ চীনা হাঁস তুলনামূলকভাবে শক্ত প্রকৃতির এবং তুলনামূলকভাবে কম যত্নে পালন করা যায়। অন্যান্য হাঁসের তুলনায় এরা খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়।বাণিজ্যিকভাবে চীনা হাঁস পালন একটি লাভজনক ব্যবসায়ের ধারণা হতে পারে। এখানে আমরা চীনা হাঁসের বাচ্চা থেকে শুরু করে বাজারজাতকরণ পর্যন্ত সকল পদ্ধতি ও পরিচালনা সম্পর্কে বিস্বতারিত বর্ণনা করার চেষ্টা করছি।

                    চীনা হাঁসের সাধারণ বৈশিষ্ট্যঃ

                    ভারী জাত হিসাবে মাসকোভি বা চীনা হাঁসকে তালিকাভুক্ত করা হয়। এদের প্রশস্ত পা ও সমান লেজ বিদ্যমান। নখর বেশ বড় ও বাকানো। শরীরের পালক কালচে পীত কালারের। এদের ডানায় সাদা পালকের সাথে সবুজাভ-কালো পালক থাকে। মুখের উপর লালচে গিট বিদ্যমান। যেটি বাচ্চা অবস্থায় না থাকলেও বয়স হলে দৃশ্যমান হয়। মুখের ত্বক কালচে। পা কালো ও চোখ বাদামি।

                    চিনা মদ্দা বা হাঁসা গুলি মায়া হাঁসের প্রায় দ্বিগুণ। সাধারণত, মদ্দা হাঁসের দৈর্ঘ্য প্রায় 34 ইঞ্চি (86 সেমি) এবং গড় ওজন প্রায় ৪.৬ থেকে ৬.৮ কেজি। মায়া হাঁসের পালক ও গঠনও একইরকম হয় তবে এটি আকারে আরও ছোট। মায়া হাঁসের ওজন ২.৬ থেকে ৩.৬ কেজি পর্যন্ত হয়।

                    এরা শান্ত স্বভাবের পাখি। তবে অপরিচিত কাউকে দেখলে তেড়ে যেতে পারে। হিস-হিস শ্বব্দ করে চলাফেরা করে। অন্য জাতের হাঁসের সাথে এরা মিলে থাকতে পারে।

                    চীনা হাঁস ভাল উড়তে পারে এবং উড়ে অনেকদূর পর্যন্ত যেতে পারে। তাই এদের ডানা-ক্লিপ করা প্রয়োজন। মাসকোভি হাঁস পালনের জন্য বেশী পানির প্রয়োজন নেই। সাধারণত অন্যান্য হাঁসের মতো এরা সাঁতার কাটে না।

                    কেন চীনা হাঁস পালন করবেন

                    • মাসকোভি বা চীনা হাঁস অনেকবছর ধরে ডিম এবং মাংসের জন্য পালন করা যায়।
                    • যেকোনো হাঁসের তুলনায় সর্বাধিক মাংস উৎপাদনকারি হাঁস ।
                    • ফ্যাট, চর্বিহীন উন্নত মানের মাংস।
                    • রোগবালাই কম। অনেক বছর বেচে থাকে।
                    • শান্ত স্বভাবের। অন্য যেকোন হাসের সাথে পালন করা যায়।
                    • পুকুর জলাশয় বা অধিক পানির প্রয়জোন নেই।
                    • লাভজনকভাবে দীর্ঘদিন পালনকরে ব্যাবসা করা যায়।

                    চীনা হাঁসের বাচ্চা সংগ্রহ

                    হাঁসের বাসস্থানঃ

                    চীনা হাঁসের খাদ্য ও পানি ব্যবস্থাপনাঃ

                    চীনা হাঁসের প্রজননঃ

                    বাজারজাতকরণঃ

                  3. মাসকোভি হাঁস বা চীনা হাঁস

                    মাসকোভি হাঁস বা চীনা হাঁস

                    মাসকোভি হাঁস বা চীনা হাঁস সারা বিশ্বেই দেখতে পাওয়া যায়। চীনা হাঁস গৃহপালিত হাঁসের মধ্যে আকারে সবথেকে বড়। এটিই একমাত্র পোষা হাঁস যা সাধারন হাঁস বা ‘ম্যালার্ড’ থেকে প্রাপ্ত নয়। বৈজ্ঞানিকভাবে এটি আসলে সত্যিকারের হাঁস নয়। তবে এটি হাঁসের খুব কাছাকাছি একটি জাত। এর বৈজ্ঞানিক নাম Cairina Moschata। এরা সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রজাতির ওয়াটার ফাউল।

                    মাসকোভি হাঁস
                    মাসকোভি হাঁস

                    উপমহাদেশ ও ইউরোপে অনেক আগে থেকেই মাসকোভি হাঁস স্থানীয় লোকদের দ্বারা গৃহপালিত হয়েছিল। এদেরকে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়। আমাদের দেশে এটি চীনা হাঁস নামেই বেশী পরিচিত। এদেরকে মাস্কি হাঁস বা বার্বারি হাঁসের মতো আরও কিছু নামে ডাকা হয়। এরা প্রচুর মশা খায় বলে এদেরকে মাসকো হাঁসও বলা হয়।

                    বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় মাস্কোভি হাঁসের আরও অনেক নাম রয়েছে। তবে মাস্কোভি হাঁসের নামটির সঠিক উৎস জানা যায়নি। ধারনা করা হয়, ‘মাসকোভি’ শব্দটি রাশিয়ার “মস্কো” থেকে নেয়া হয়েছে। তবে এটি শুধুমাত্র মস্কোর স্থানীয় কোন হাঁস নয়। গৃহপালিত মাংসের হাঁসের মধ্যে এটি পৃথিবীব্যাপী খুব বিখ্যাত।

                    মাসকোভি হাঁসের শারীরিক বৈশিষ্ট্যঃ

                    ভারী জাতের হাঁস হিসাবে মাসকোভি হাঁসকে তালিকাভুক্ত করা হয়। এদের প্রশস্ত পা ও সমান লেজ আছে। এদের নখর বেশ বড় ও বাকানো। শরীরের পালক কালচে পীত কালারের। এদের ডানায় সাদা পালকের সাথে সবুজাভ-কালো পালক থাকতে পারে। মুখের উপর লালচে গিট বিদ্যমান। যেটি বাচ্চা অবস্থায় না থাকলেও বয়স হলে দৃশ্যমান হয়। তবে মুখের ত্বক কালচে। পা কালো ও চোখ বাদামি।

                    এদের মদ্দা বা হাঁসা গুলি মায়া হাঁসের আকারের প্রায় দ্বিগুণ। সাধারণত, মদ্দা হাঁসের দৈর্ঘ্য প্রায় 34 ইঞ্চি (86 সেমি) এবং গড় ওজন প্রায় ৪.৬ থেকে ৬.৮ কেজি। মায়া হাঁসের পালক ও গঠনও একইরকম হয় তবে এটি আকারে আরও ছোট। মায়া হাঁসের ওজন ২.৬ থেকে ৩.৬ কেজি পর্যন্ত হয়।

                    মাসকোভি বা চীনা হাঁস পালনের উদ্দ্যেশ্যঃ

                    চীনা বা মাসকোভি হাঁস একটি মাংস উৎপাদনশীল হাঁসের জাত হিসাবে উত্থাপিত হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এদেরকে মাংসের জন্য পালন করা হয়। তবে এদেরকে হাইব্রিড হাঁস উৎপাদনের জন্য পেকিন বা বেইজিং হাঁসের সাথে পালন করা হয়। এদের ক্রসে যে বাচ্চা হয় তা আকরে বেশ বড় হলেও এটি হিজড়া হয়। অর্থাৎ, এদের প্রজনন ক্ষমতা থাকে না।

                    চিনা হাঁস পোষা হাঁস হিসেবে পৃথিবীব্যাপী সৌখিন হাঁস-খামারিদের কাছে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এদের মাংস অত্যন্ত সুস্বাদু ও ভাল মানের।

                    বিশেষ নোটঃ

                    মাসকোভি হাঁস আসলে হাঁস নয় বরং অনন্য এক পাখি। এরা শান্ত স্বভাবের পাখি। তবে অপরিচিত কাউকে দেখলে তেড়ে যেতে পারে। এরা হিস-হিস শ্বব্দ করে চলাফেরা করে। অন্য জাতের হাঁসের সাথে এরা মিলে থাকতে পারে। যদিও এদের ক্রসে হিজড়া বাচ্চা উৎপাদন হয়। এরা সাধারনত জোড় বাধতে পছন্দ করে। নিজ জাত না পেলে অন্য জাতের হাঁসের সাথেই এরা জোড় বাঁধে।

                    মাসকোভি হাঁস বেশ ভাল উড়তে পারে এবং একবারে অনেকদূর পর্যন্ত উড়ে যেতে পারে। তাই এদের ডানা-ক্লিপ করা প্রয়োজন। বিশেষত হাঁসরা দীর্ঘ দূরত্বে উড়তে সক্ষম হয়। মাসকোভি হাঁস পালনের জন্য বেশী পানির প্রয়োজন নেই। এরা সাধারণত অন্যান্য হাঁসের জাতের মতো সাঁতার কাটে না। কারণ এদের তেল গ্রন্থিগুলি বিকাশাধীন।

                    বুনো মুসকোভি হাঁস লাজুক এবং সাধারণত নীরব। গার্হস্থ্য মাসকোভিহাঁস খুব বুদ্ধিমান, কিন্তু কখনও কখনও আক্রমণাত্মক হতে পারে। কিছু লোক তাদের বুদ্ধি, স্বতন্ত্র চেহারা এবং বন্ধুত্বপূর্ণ এবং বিশ্বাসযোগ্য ব্যক্তিত্বের জন্য জাতকে প্রশংসা করে। অন্যরা তাদের অগোছালোতা, আগ্রাসন এবং ভিন্ন চেহারার জন্য তাদের অপছন্দ করে। এরা অন্য হাঁসের মত একত্রে না চলে সাধারণত ছোট ছোট দলে ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণত এরা পোকামাকড়, মাছ, পাতা, শিকড়, বীজ, ডালপালা, সরীসৃপ এবং ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী খেয়ে থাকে। এরা তেলাপোকা খুবই পছন্দ করে। এদের কাছে তেলাপোকা অনেকটা চকলেট হিসেবে বিবেচিত।

                    মাসকোভি হাঁস

                    মাসকোভি হাঁস দ্রুত বর্ধমানশীল হাঁস নয়। পুরোপুরি পরিণত হতে প্রায় এক বছর সময় নেয়। তবে মাংসের হাঁসের জাত হিসাবে এরা বেশ আগেই জবাইয়ের বয়সে পৌঁছে যায়। মদ্দা হাঁস প্রায়ই মর্যাদার জন্য এবং হাঁসের সাথে বংশবিস্তারের জন্য অন্যান্য মদ্দা হাঁসের সাথে লড়াই করে। এক্ষেত্রে মদ্দা হাঁস খুবই আক্রমণাত্মক হতে পারে।

                    মায়া হাঁস সাদা কালারের ডিম দেয়। এরা মা হিসেবে খুবই ভালো। সাধারণত একসাথে ৮ থেকে ১৬ টি ডিম দিয়ে তা দিতে বসে। এবং প্রায় 35 দিনের জন্য ডিম পারা বাদ দেয়।

                    নীচের চার্টে মাসকোভি বা চীনা হাঁসের পূর্ণ বংশের তথ্য দেয়া হলো।

                    মাসকোভি বা চীনা হাঁসের তথ্য | জাতের তথ্য

                    জাতের নাম: মাসকোভি। ( cairina moschata)
                    অন্য নাম: মাস্কো, চীনা, বার্বারী ইত্যাদি সহ আঞ্চলিক আরো অনেক নাম বিদ্যমান।
                    পালনের উদ্দ্যেশ্য: মাংস ও সৌখিনতার জন্য।
                    জাতের আচরণ: শান্ত-শিষ্ট,আকর্ষনীয়,শক্ত, ধীরস্থির। মাতৃত্বস্নেহ প্রবন।
                    আকার: বেশ বড়। হাঁসা প্রায় ৪.৬ থেকে ৬.৮ কেজি ও হাঁসি প্রায় ২.৬ থেকে ৩.৬ কেজি।
                    তা দেয়ার প্রবনতা: সাধারন।
                    জলবায়ু সহনশীলতা: সব জলবায়ু ।
                    ডিম রঙ: সাদা।
                    ডিমের আকার: বড়। (৬৫ গ্রাম প্রায়)
                    ডিমউৎপাদনশীলতা: ১০০-১২০ ডিম/বছর
                    বৈচিত্র্য:কালো,সবুজাভ কালো, নীল, সাদা, চকলেট সহ কয়েকটি রঙ
                    মূল দেশ:আমেরিকা, ব্রাজিল, ইউরোপ।