Category: ফাউমি মুরগি

  • ফাউমি মুরগির ঔষধের তালিকা – রোগ ও চিকিৎসা পদ্ধতি

    ফাউমি মুরগি পালন অন্যান্য মুরগির তুলনায় সহজ। সাধারন ব্যবস্থাপনায় ফাউমি মুরগি লাভজনকভাবে পালন করা সম্ভব। প্রাকৃতিকভাবে এরা ভালো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন হলেও কিছু কমন রোগ ফাউমি মুরগিতে দেখা যায়। এই লেখাতে আমরা ফাউমি মুরগির ঔষধের তালিকা রোগ ও চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।

    সাধারনত বাচ্চা বয়সে ফাউমি মুরগির মৃত্যুহার অধিক এবং অপুষ্টিজনিত কারনে সঠিকভাবে বেড়ে উঠেনা। ফলে ডিম ও মাংস উৎপাদন সঠিকমাত্রায় আসেনা। বাচ্চা বয়সে সঠিকভাবে যত্ন নিলে দেশি মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো থাকে।

    ফাউমি মুরগির ঔষধের তালিকা

    বয়স দিনঔষধের নাম
    প্রথম দিনলাইসোভিট বা গ্লুকোজ
    ২ থেকে ৪ দিন টানাএমক্সাসিলিন*
    ৩ থেকে ৫ দিনের ভিতরআইবি+এনডি লাইভ ভ্যাক্সিন (রানীক্ষেত ও ব্রংকাইটিস)
    ১০ থেকে ১২ দিনের ভিতরগামবোরো লাইভ ভ্যাক্সিন
    ১২ থেকে ১৪ দিনলিভারটনিক ও ভিটামিন
    ১৮ থেকে ২২ দিনের ভিতরগামবোরো লাইভ ভ্যাক্সিন
    ২৪ থেকে ২৬ দিনের ভিতরএনডি লাইভ ভ্যাক্সিন (রানীক্ষেত)
    ২৪ থেকে ২৬ দিনএম্প্রোলিয়াম + সিপ্রো*
    ৩০ তম দিনফাউলপক্স ভ্যাক্সিন।
    ৩৫ তম দিনকৃমিনাষক ঔষধ।
    ৪৫ থেকে ৪৮ দিনের ভিতররানীক্ষেত লাইভ ভ্যাক্সিন* (প্রাদুর্ভাব বেশি থাকলে)
    ৫০ থেকে নিয়মিতপ্রোবায়োটিক + ভিটামিন + লিভারটনিক

    *যেকোন এন্টিবায়োটিক ব্যাবহারের পূর্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

    অবশ্যই ফাউমি মুরগিকে টিকা প্রাদান করতে হবে। ফাউমি মুরগির ভ্যাক্সিন সিডিউল নিয়ে জানতে আমাদের লেখাটি পড়তে পারেন।

    আরো পড়ুন >> ফাউমি মুরগির ভ্যাকসিন সিডিউল

    নিয়মিত ভাবে ফাউমি মুরগিকে বেশ কিছু ভিটামিন দেয়া যেতে পারে। এতে মুরগির ডিম উৎপাদন ভালো থাকবে।

    ঔষধের নামসাপ্তাহিকপ্রয়োগমাত্রা
    এডি৩ইসপ্তাহে দুইদিন সকালের পানিতে২ লিটার পানিতে ১ মিলি।
    লিভার টনিকসপ্তাহে একদিন সকালের পানিতে৩ লিটার পানিতে ১ মিলি।
    ই-সেলএক সপ্তাহ অন্তর পরপর দুইদিন২ লিটার পানিতে ১ মিলি।
    জিংকসপ্তাহে একদিন সকালের পানিতে১ লিটার পানিতে ১ মিলি।
    ক্যালসিয়ামসপ্তাহে একদিন বিকেলের পানিতে১ লিটার পানিতে ১ মিলি।

    ফাউমি মুরগির রোগ ও চিকিৎসা

    ফাউমি মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলেও বেশ কিছু রোগে আক্রান্ত হতে পারে। সাধারনত এ রোগগুলি কমন কিছু উপোসর্গ এর মাধ্যমে প্রকাশ পায়। যেমন, মুরগির ঝিমিয়ে থাকা, সাদা পাতলা পায়খানা করা, মাথার ঝুটি শুকিয়ে যাওয়া, দূর্বল বা নিস্তেজ হয়ে পরা ইত্যাদি লক্ষন দেখা যায়।

    নিচে ফাউমি মুরগির কিছু রোগ ও এর চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা করা হলো।

    রানিক্ষেত রোগ

    রানিক্ষেত একটি ভাইরাস জনিত মারাত্মক সংক্রামক রোগ। যা মূলত, ‘নিউক্যাসল ডিজিজ ভাইরাস‘ (এনডিভি) দ্বারা সংক্রমিত হয়। এটি প্রাথমিকভাবে তীব্র শ্বাসযন্ত্রের রোগ হিসাবে দেখা দেয়। তবে ঝিমানো, দুর্বলতা বা স্নায়বিক প্রকাশ এবং ডায়রিয়ার মত লক্ষনসমূহ দেখা যেতে পারে।

    রানীক্ষেত রোগে শতভাগ প্রর্যন্ত মারা যেতে পারে। ফাউমি মুরগির যে কোন বয়সেই এই রোগ হতে পারে। তবে ভ্যাকসিন এর মাধ্যমে এই রোগের প্রতিরোধ করা যায়।

    চিকিৎসাঃ রানীক্ষেত ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে হবে।

    মুরগির রানীক্ষেত রোগ ও চিকিৎসা সম্পর্কে আরো জানতে আমাদের এই লেখাটি পড়ুন।

    গামবোরো রোগ

    গামবোরো একটি ভাইরাস জনিত রোগ। এটি মুরগির লসিকা গ্রন্থি বারসাকে আক্রান্ত করে। একে ‘ইনফেকসাস বারসাল ডিজিজ’ বলা হয়। গামবোরো হলে মুরগির রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা আক্রান্ত হয়। এ রোগে মৃত্যুর হার প্রায় ৩০%। সাধারণত ১০-৫০ দিন বয়স পর্যন্ত এই রোগের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা বেশী থাকে।

    চিকিৎসাঃ ভাইরাসজনিত রোগ বিধায় এর জন্য ভ্যাকসিন বা টিকা প্রয়োগ করতে হবে। ভাইরাসজনিত রোগের জন্য দেশি মুরগির ভ্যাকসিন সিডিউল মেনে চলতে হবে।

    ফাউল পক্স

    ফাউল পক্স ভাইরাসজনিত একটি সংক্রামক রোগ। দেশি মুরগির যে কোন বয়সেই ফাউল পক্স হতে পারে কিন্তু বাচ্চা মুরগিতে আক্রান্ত হলে বেশি মারা যায়। সাধারণত শরীরের পালক বিহীন জায়গায় সাধারণত শক্ত গোটা উঠে এবং চোখ দিয়ে পানি পড়ে। এই রোগে মুরগির শরীরে তীব্র জ্বর থাকে।

    চিকিৎসাঃ যথাসময়ে ফাউল-পক্স এর টিকা প্রদান করতে হবে।

    রক্ত আমাশয় বা ককসিডিওসিস

    এটি একটি প্রোটোজোয়া জনিত রোগ। ২ মাস পর্যন্ত এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা বেশী। সারা বছরই এ রোগটি দেখা গেলেও তবে বর্ষাকালে এর প্রার্দুভাব বেশি দেখা যায়। রক্ত আমাশয় হলে মুরগির ওজন সঠিক মাত্রায় আসে না। যা খামারিকে ব্যাপক লসের মুখে ফেলে দেয়।

    চিকিৎসাঃ টল্টাজুরিল বা এমপ্রোলিয়াম জাতীয় ওষুধ দিয়ে এই রোগ নিয়ন্ত্রন সম্ভব।

    কৃমির সংক্রামন

    ফাউমি মুরগিতেও কৃমির আক্রমন ঘটে। কৃমি হলে খাদ্যে অরুচী আসে এবং খাদ্য গ্রহন কমিয়ে দেয়। ফলে মুরগির ওজন কাংক্ষিত মাত্রায় আসে না। কৃমি হলে মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।

    চিকিৎসাঃ ফাউমি মুরগিকে অবশ্যই নিয়মিতভাবে কৃমির ওষুধ দিতে হবে।

    ফাউল কলেরা

    ফাউল কলেরা মুরগির একটি ব্যাকটেরিয়াজনিত পানিবাহিত রোগ। এই রোগে মৃত্যুর হার প্রায় ৩০-৫০% পর্যন্ত হতে পারে। ফাউল কলেরা (Pasteurella matocida) নামক ব্যাক্টেরিয়ার কারনে হয়ে থাকে।

    অতিরিক্ত গরম পড়লে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা বেশী হয়। এছাড়া পরিবেশে আদ্রতা বেশি থাকলে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

    চিকিৎসাঃ যেহেতু ব্যাক্টেরিয়াজনিত রোগ তাই যে কোন একটি ভালো এন্টিবায়োটিক দিতে হবে। তবে কলেরা রোগের সরকারি ভ্যাকসিন বা টিকা রয়েছে।

  • ফাউমি মুরগির খাবার তালিকা ।। যেভাবে তৈরি করবেন ফাউমি মুরগির খাদ্য

    ফাউমি মুরগির খাবার তালিকা ।। যেভাবে তৈরি করবেন ফাউমি মুরগির খাদ্য

    ফাউমি মুরগি পালন অন্যান্য মুরগির তুলনায় সহজ। সাধারন খাদ্যে ভালো এরা তুলনামূলক প্রোডাকশন দিয়ে থাকে। এদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও অন্যন্য। তবে ডিমের জন্য ফাউমি মুরগি পালন করা হলে, সঠিক নিয়মে ফাউমি মুরগির খাদ্য তালিকা প্রনয়ন করতে হবে।

    ফাউমি মুরগির খাদ্য তালিকা করতে কয়েকটি বিষয় বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন। যেমন বয়স, পালনের উদ্দেশ্য, আবহাওয়া, পুষ্টিমান ইত্যাদি। সাধারণত এক মাস বয়স পর্যন্ত স্টার্টার, বাড়ন্ত সময়ে গ্রোয়ার ও ডিম পাড়ার সময়ে লেয়ার ফিড সরবরাহ করা হয়ে থাকে।

    যথাযথ পুষ্টিমান জেনে আপনি সহজেই ফাউমি মুরগির খাদ্য তৈরী করতে পারেন।

    ফাউমি মুরগি সম্পর্কে আরো জানতে পড়ুনঃ ফাউমি মুরগি সম্পর্কে দরকারী তথ্য

    বয়স অনুসারে ফাউমি মুরগিকে সাধারণত ৩-৫ ধরণের খাবার দেয়া হয়।

    খাবারের নামবয়স (সপ্তাহ)
    স্টার্টার০-৬ সপ্তাহ
    গ্রোয়ার৭-১৪ সপ্তাহ
    লেয়ার ১১৫-৪৫ সপ্তাহ
    লেয়ার ২৪৬-৯৫ সপ্তাহ

    ফাউমি মুরগির খাদ্য তালিকা

    ফাউমি মুরগির জন্য ১০০ কেজি খাবার তৈরির একটি তালিকা দেয়া হলো।

    উপাদানস্টার্টারগ্রোয়ারলেয়ার ১লেয়ার ২
    ভূট্টা৫২ কেজি৫৪কেজি৫৫ কেজি৫৬ কেজি
    সয়াবিন মিল২৫ কেজি২৪ কেজি২২ কেজি২২ কেজি
    রাইচ পালিশ১০ কেজি১০ কেজি৮ কেজি৭.৫ কেজি
    প্রোটিন ৬০%৮ কেজি৫ কেজি৪ কেজি৩ কেজি
    লাইমস্টোন / ঝিনুক চূর্ণ২ কেজি২.৫ কেজি৮ কেজি১০ কেজি
    লবণ৩০০ গ্রাম২৮০ গ্রাম২৮০ গ্রাম২৮০ গ্রাম
    ডিসিপি৩০০ গ্রাম৩০০ গ্রাম৫০০ গ্রাম৫০০ গ্রাম
    সালমোনেলা কিলার৩০০ গ্রাম২৫০ গ্রাম৩০০ গ্রাম৩২০ গ্রাম
    প্রিমিক্স২০০ গ্রাম২৫০ গ্রাম৩০০ গ্রাম৩০০ গ্রাম
    ডিএল- মিথিওনিন১৫০ গ্রাম১৩৫ গ্রাম১৩০ গ্রাম১২৫ গ্রাম
    এল-লাইসিন১০০ গ্রাম৯০ গ্রাম৮০ গ্রাম৬০ গ্রাম
    কোলিন ক্লোরাইড৬০ গ্রাম৫০ গ্রাম৫০ গ্রাম৫০ গ্রাম
    টক্সিন বাইন্ডার১২৫ গ্রাম১৩৫ গ্রাম১৫০ গ্রাম১৫০ গ্রাম
    সোডা৫০ গ্রাম৭৫ গ্রাম
    সয়াবিন তেল২০০ গ্রাম১৫০ গ্রাম১০০ গ্রাম
    মোটঃ১০০ কেজি১০০ কেজি১০০ কেজি১০০ কেজি

    ফাউমি মুরগি খাদ্য পুষ্টিমান চাহিদা

    বয়স অনুযায়ী খাবারে পুস্টিগুণের চাহিদা পরিবর্তন হয়। শীত গরম অনুযায়ী এনার্জি কম বেশি হয়। ফাউমি মুরগির খাদ্য তৈরিতে নিম্নলিখিত চার্টটি বিবেচনায় রাখতে হবে।

    পুষ্টি উপাদানস্টার্টারগ্রোয়ারলেয়ার ১লেয়ার ২
    মেটাবলিক এনার্জি (kcal/kg)২৭৫০-২৯৫০২৭০০-২৮৫০২৭৮০-২৯০০২৭৫০-২৯০০
    ক্রুড প্রোটিন (g/day)২০-২২১৭-১৯১৬-১৭১৬-১৭
    লাইসিন (mg/day)৯৫০-১১১০৮০০-৭৯০৬২০-৬৮০৬৭০-৭৪০
    মিথিওনিন (mg/day)৪৫০-৪৯০৩৯০-৪৩০৩৫০-৩৮০৩৪০-৩৭০
    ক্যালসিয়াম (g/day)২.৬০২.৮০-৩.৯০
    সোডিয়াম ও ক্লোরাইড (mg/day)২০০১৮০১৮০১৮০
    থিওনিন (mg/day)৬৫০-৭৮০৫৫০-৬৪০৫৫০-৫৮০৫০০-৫৬০
    সোনালি মুরগির খাবার

    বিশেষ নোটঃ উল্লেখিত তালিকাতে সয়াবিন তেল ওজন ধরা হয়নি। এবং টক্সিন বাইন্ডার, সালমোনেলা কিলার, ভিটামিন-মিনারেলস প্রিমিক্স প্রয়োজন অনুযায়ী স্ব-স্ব কোম্পানীর নির্দেশনা মোতাবেক ব্যবহার করতে হবে।

    ফিড এডিটিভস সমূহঃ

    এনজাইম৬০ গ্রাম৫০ গ্রাম৮০ গ্রাম৭৫ গ্রাম
    প্রোবায়োটিক৬০ গ্রাম৫০ গ্রাম৪৫ গ্রাম৪৫ গ্রাম৪৫ গ্রাম
    ককসিডিওস্ট্যাট৩০ গ্রাম৩৫ গ্রাম
    ফাইটেজ০.৭৫ গ্রাম০.৭৫ গ্রাম
    থিওনিন৬০ গ্রাম৫০ গ্রাম৩৫ গ্রাম৪৫ গ্রাম৪০গ্রাম

    বিশেষ নোটঃ খামারের মুরগির স্বাস্থ, উৎপাদন, খাদ্য উপাদানের গুণগত মান ও আবহাওয়ার তারতম্যের কারণে এ খাদ্য তালিকাটিতে পরিবর্তন করা যেতে পারে।

    উল্লেখ্য যে, খাদ্য তালিকায় উল্লেখিত ফিড এডিটিভস সমূহে প্রয়োজন অনুযায়ী স্ব-স্ব কোম্পানীর নির্দেশনা মোতাবেক ব্যবহার করতে হবে অথবা অভিজ্ঞ ভেটেরিনারিয়ান কর্তৃক পরিবর্ধন বা পরিমার্জন করা যেতে পারে।

    আরো পড়ুনঃ যেভাবে তৈরি করবেন সোনালি মুরগির খাবার

  • ফাউমি মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা

    ফাউমি মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা

    অসম্ভব রোগ প্রতিরোধি ও ডিম পারার জন্য ফাউমি মুরগি পালন বেশ জনপ্রিয়। সোনালি মুরগির প্যারেন্টস স্টক তৈরীতে ফাউমি মুরগি পালন করা হয়ে থাকে। সাধারণভাবে ফাউমি মুরগি বেশ কিছু রোগ প্রতিরোধি। যেমন ম্যারেক্স ডিজিজ। তবে ফাউমি মুরগির খামার করতে চাইলে আপনাকে বেশ কিছু রোগের প্রতিরোধ ব্যাবস্থা নিতে হবে।

    রোগ প্রতিরোধ ব্যবাস্থার জন্য ভ্যাকসিন দেয়া একটি কার্যকারী পন্থা। আপনার খামারকে রোগ মুক্ত ও নিরাপদ রাখতে চাইলে সঠিকভাবে ভ্যাকসিন শিডিউল ও জৈব নিরাপত্তা মেনে চলার পরামর্শ দেয়া হলো।

    নিচের টেবিলে ফাউমি মুরগির একটি প্রস্তাবিত ভ্যাকসিন সিডিউল দেয়া হলো।

    ফাউমি মুরগির প্রস্তাবিত টিকাদান কর্মসূচি

    বয়সরোগের নামভ্যাকসিনের নামপ্রকৃতিপ্রয়োগ পদ্ধতি
    ১-৩ দিনরাণীক্ষেত+ ব্রংকাইটিসআইবি+ এনডিলাইভচোখে ফোঁটা
    ৭-৯ দিনগামবোরোআই বি ডিলাইভফুখে ফোঁটা
    ১৬-১৭ দিনরাণীক্ষেতল্যাসোটালাইভচোখে ড্রপ
    ১৮-২০ দিনগামবোরোআই বি ডিলাইভখাবার পানিতে
    ২৪-২৮ দিনএভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা (বার্ড ফ্লু)এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা (H5N1)কিল্ডচামড়ার নিচে ইনজেকশন
    ৩০-৩৫ দিনফাউল পক্সফাউল পক্সডি এন এ লাইভডানায়সূচ ফুটানো
    ৬-৭ সপ্তাহরাণীক্ষেতএনডিকিল্ডঘাড়ের চামড়ার নিচে ইনজেকশন
    ৮ সপ্তাহফাউল কলেরাফাউল কলেরাকিল্ডনির্দেশনা মোতাবেক
    ৯ সপ্তাহইনফেকশাস করাইজা, সালমোনেলাকরাইজা + সালমোনেলাকিল্ড
    লাইভ
    নির্দেশনা মোতাবেক
    ১২ সপ্তাহফাউল কলেরাফাউল কলেরাকিল্ডনির্দেশনা মোতাবেক
    ১৫-১৬ সপ্তাহএভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা (বার্ড ফ্লু)এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা (H5N1)কিল্ডচামড়ার নিচে ইনজেকশন
    ১৬ সপ্তাহকরাইজা, সালমোনেলা, রাণীক্ষেত, ব্রংকাইটিসজি + এনডি +আইবি কিল্ডনির্দেশনা মোতাবেক
    ফাউমি মুরগির ভ্যাকসিন সিডিউল

    বিশেষ নোটঃ

    প্রতি ৬ মাস অন্তর রানীক্ষেত কিল্ড ভ্যাকসিন দিতে হবে। ভ্যাকসিন টাইটার কমে গেলে লাইভ ভ্যাকসিন করা যেতে পারে। সালমোনেলা রোগের ভ্যাকসিন প্রয়োগ করার পূর্বে মুরগি সালমোনেলা মুক্ত কিনা পরীক্ষা করে নিলে ভ্যাকসিন কার্যকর হয়ে থাকে।

    মুরগির ভ্যাকসিন সিডিউল যেসব বিষয়ের উপর নির্ভর করে

    উল্লেখ্য বিভিন্ন কোম্পানি বিভিন্ন নামে ভ্যাকসিন বাজারজাত করে থাকে। এক্ষেত্রে রোগের নাম অনুযায়ী ভ্যাকসিন নির্বাচন করতে হবে।

    এলাকা আবাহাওয়া, মুরগির স্বাস্থ ইত্যাদি বিবেচনায় উল্লেখিত ভ্যাকসিন সিডিউল পরিবর্তন করা যেতে পারে।

    আরো পড়তে পারেন..

  • ফাউমি মুরগি সম্পর্কে দরকারী তথ্য

    ফাউমি মুরগি সম্পর্কে দরকারী তথ্য

    ফাউমি প্রাচীন মিশরীয় মুরগির একটি জাত। কয়েক শত বছর ধরে জাতটি মিসরের বিখ্যাত নীল নদ ও এর আশেপাশের অঞ্চলে পালিত হয়ে আসছে। এদের নামকরণ করা হয়েছে মিসরের ‘ফাইয়াম’ প্রদেশ থেকে। ফাইয়াম প্রদেশের দক্ষিন পশ্চিম অঞ্চলের জলাভূমি ও এর আশেপাশের কাঁটাযুক্ত ঝোপঝাড় ফাউমি মুরগির আদি নিবাস। মিশরীয়রা অনেক আগে (খৃষ্টপূর্ব) থেকেই ফাউমি মুরগি পালন করে আসছে।

    ফাওমি জাতের মুরগি সর্বপ্রথম ১৯৪০ সালে আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (University of Iowa) এক অধ্যাপকের মাধ্যমে পশ্চিমে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর থেকেই মূলত জাতটি বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পায়। আমাদের দেশে পাকিস্তান আমলে জাতটিকে সরকারি ভাবে পালনের জন্য সংরক্ষন করা হয়। পাকিস্তান থেকে নিয়ে আসার কারনে এরা মূলত মিশরীয় মুরগি হলেও অনেকের কাছে পাকিস্তানি মুরগি নামে পরিচিতি পায়।

    ফাওমি মুরগি মূলত বন্য মুরগির একটি হাইব্রিড জাত। এরা গৃহপালিত অন্যান্য মুরগির সাথে প্রজনন ঘটায়। ধারণা করা হয়, মিশরের কাঁটাযুক্ত পাম (Palm বা খেজুর) বন এবং জলাভূমি থেকে (প্রায় 3,000 বছর আগে) এরা অভিযোজিত হয়েছে। ফাউমি মিশরে খুবই সাধারণ এবং জনপ্রিয় একটি মুরগি জাত হিসেবে বিবেচিত।

    ফাউমি মুরগির বৈশিষ্ট্য

    ফাউমি-মুরগি

    ফাওমি মুরগি আকারে ছোট, বড় ঘনকালো চোখ এবং উচু লেজ বিশিষ্ট। এদের এগিয়ে থাকা বুক, ঘাড় ও সোজা উঁচু লেজের কারনে রোডরানার পাখির ( কোকিল গোত্রের একটি দ্রুতগামী পাখি, যা দক্ষিণ আমেরিকা থেকে মধ্য আমেরিকা পর্যন্ত শুষ্ক দেশে পাওয়া যায়) সাথে তুলনা করা হয়।

    ফাঊমি হালকা জাতের মুরগি হিসেবে বিবেচিত। এদের নীলভ কালো পা, লালচে কানের লতি ও মাথায় একক মাঝারি ঝুঁটি বিদ্যমান। এদের কানের লতির মধ্যে সাদা সাদা স্পট দেখা যায়। ফাওমি মুরগির ত্বক নীলাভ কালো। এদের গলা ও ঘাড় সিলভার-সাদা রঙের পালকে ও কালো কালো ছোপে সারা শরীর ঢাকা।

    ফাওমি ডিম দেয়া মুরগি জাত হিসেবে বিবেচিত। এরা ছোট আকারের সাদা রঙের ডিম দেয়। সাধারনত এদের কুচে হওয়ার প্রবণতা কম। তবে বয়স দুই বা তিন বছর হলে ডিমে তা দেয়ার প্রবনতা দেখা দিতে পারে।

    ফাওমি মুরগি অবিশ্বাস্যভাবে রোগ প্রতিরোধী। সহজেই এরা রোগে আক্রান্ত হয়না। ফাওমি মারেক্স এবং অন্যান্য অনেক অসুস্থতার জন্য স্বাভাবিকভাবেই প্রতিরোধী বলে পরিচিত।

    এদের ম্যাচুরিটি বেশ দ্রুতই আসে। মোরগগুলি অবিশ্বাস্যভাবে পাঁচ বা ছয় সপ্তাহের মধ্যেই ডাক দেয় এবং মুরগি সাড়ে চার থেকে সাড়ে চার মাসের মধ্যে ডিম দেয়া শুরু করে। গড়ে একটি মোরগ প্রায় ১.৮ কেজি ও একটি মুরগি ওজন প্রায় ১.৫ কেজি হয়। সিলভার পেন্সিল (Silver penciled) ফাওমি মুরগি সবচেয়ে পরিচিত এবং একমাত্র ফাউমির জাত।

    আচরণ / মেজাজ

    ফাউমি মুরগি উষ্ণ জলবায়ুতে বিশেষভাবে উপযুক্ত। সাধারণত এরা বেশ শক্তও সক্রিয় শক্ত। বেঁচে থাকার জন্য সামান্য খাদ্য প্রয়োজন।

    ফাউমির মধ্যে বন্য পাখির স্বভাব পরিলক্ষিত হয়। সাধারনত এদেরকে ধরা হলে, এরা বেশ রেগে যায়। এরা সবসময়ে পোষ মানা পছন্দ করেনা। এবং এরা সম্পূর্ণরূপে পোষ মানেনা। যদিও এদেরকে বিভিন্ন উপায়ে পোষ মানিয়ে রাখা হয়। এরা প্রাণবন্ত এক মুরগির জাত। বেশ উড়াউড়ি করে এবং গাছ গাছালি পছন্দ করে । তাই যত্নের সাথে সীমানা বা বেড়া দেওয়া প্রয়োজন।

    ফাওমি মুরগি সামান্য আগ্রাসী। তবে এরা বিশেষ আক্রমনাত্মক হয় না এবং মোরোগেরা একে অপরের প্রতি সহনশীল হয়। ডিম পাড়া মুরগি দিয়ে সাধারণত ডিমে তা দেয়না। কিন্তু বয়স দুই বা তিন বছর হলে ডিমে তা দেয়ার প্রবনতা দেখা দিতে পারে। এদের ডিম হিটিংয়ের জন্য ইনকুইবেশন দরকার।

    নীচে ফাউমি মুরগির পূর্ণ প্রজনন তথ্য পর্যালোচনা করা হলো।

    ফাউমি মুরগি | জাতের তথ্য বা প্রোফাইল

    জাতের নাম: ফাউমি।
    অন্য নাম : পাকিস্তানি, ফাওমি।
    পালনের উদ্দ্যেশ্য: সৌখিন (Ornamental), ডিমের উদ্দেশ্য ও সোনালির প্যারেন্ট স্টক তৈরিতে।
    জাতের আচরণ: চঞ্চল, উড়াউড়ি , বন্ধুত্বপূর্ণ, কৌতুহলী ।
    আকার: ছোট থেকে মাঝারি। সাধারণত ১.৪ থেকে ২.২ কেজি।
    তা দেয়ার প্রবনতা: তেমন প্রবণতা নেই।
    ঝুঁটি: মাঝারি একক লাল ঝুঁটি।
    জলবায়ু সহনশীলতা: সব জলবায়ু তবে উষ্ণ জলবায়ুতে ভালো।
    ডিম রঙ: হালকা ধূসর।
    ডিমের আকার: ছোট।
    ডিম উৎপাদনশীলতা: ভাল (প্রায় ২৬০ ডিম/বছর)।
    বৈচিত্র্য: সিলভার পেন্সিল।
    ফাউমি মুরগির তথ্য টেবিল

    ফাউমি মুরগি পালনের ভাল দিকঃ

    • দেখতে খুব সুন্দর।
    • বেশ সক্রিয় ও শিকার প্রতিরোধী। শিয়াল, কুকুর সহজে ক্ষতি করতে পারেনা।
    • প্রতিরক্ষামূলক কিন্তু আক্রমনাত্মক নয়।
    • প্রাণবন্ত ও বন্ধুত্বপূর্ণ।
    • খুব ভালো রোগ প্রতিরোধী ও শক্ত জাতের ।
    • দ্রুত ম্যাচিউর হয়।
    • বেশ ভালো ডিম পাড়ে।
    • কম খাদ্য পয়োজন।
    • মাংস খুব সুস্বাদু ।
    • মোরগ ঝগড়া করেনা।
    ফাওমি মুরগি
    ফাউমি মুরগি

    ফাউমি মুরগি পালনের খারাপ দিকঃ

    • মাংস উৎপাদনের জন্য ভালো নয়।
    • আকারে ছোট ডিম দেয়।
    • আবদ্ধ পরিবেশ পছন্দ করেনা।
    • উড়াউড়ি করে।

    কেন ফাউমি মুরগি পালন করবেন?

    ফাউমি মুরগির জন্য আপনার জন্য উপোযুক্ত যদি আপনি……

    • সোনালি মুরগীর প্যারেন্ট স্টক করতে চান।
    • বেশ ডিম দেয়, এমন জাতের মুরগি পালন করতে চান।
    • এদের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা অসামান্য।
    • কম খাদ্য ব্যবহার করে মুরগি পালতে চান।
    • সুন্দর শোভাবর্ধনের জন্য মুরগি পালতে চান।
    • গ্রাম্য পরিবেশে ভালো এমন মুরগি পালতে চান।
    • গরম আবহাওয়ায় উপযোগী মুরগি পালতে চান।

    এধরনের তথ্যনির্ভর লেখা নিয়মিত পেতে আমাদের উৎসাহিত করুন। যেকোন একটি বিজ্ঞাপনে ক্লিক করুন এবং আপনার মতামত আমাদেরকে জানান।

    আরো পড়তে পারেন..

    কাদাখনাথ মুরগি

    ফাউমি মুরগির ভ্যাকসিন সিডিউল

    মুরগির বিভিন্ন জাত পরিচিতি ও সাধারণ বৈশিষ্ট

    বাংলাদেশে প্রাপ্ত বিভিন্ন দেশী মুরগি ও তার বৈশিষ্ট্য

    ক্রয়লার বা কয়লার মুরগি সম্পর্কিত তথ্

    সিল্কি মুরগির বৈশিষ্ট্য এবং সমস্ত তথ্য

    রোড আইল্যান্ড রেড মুরগি সম্পর্কে দরকারী তথ্য