হাঁসের ডিম উৎপাদন বৃদ্ধির উপায়

হাঁস পালন একটি লাভজনক পেশা। হাঁস পালনে লাভবান হতে চাইলে অধিক ডিম উৎপাদনের কোন বিকল্প নেই।হাঁস পালনে খামারিদের চিন্তার কারণ ঠিকমতো হাসের ডিম না পাড়া। মূলত সঠিক নিয়মে খাদ্য ও পরিচর্যা না করার কারনেই হাঁস ঠিকমতো ডিম পাড়েনা। এখানে আমারা হাঁসের ডিম উৎপাদন বৃদ্ধির উপায় নিয়ে আলোচনা করেছি।

হাঁস ডিম না পাড়ার কারণ কি

প্রথমত আমরা হাঁসের ডিম না পাড়ার কয়েকটি কারণ উল্লেখ করতে চাই।

  • হাঁস অসুস্থ কিনা। ঠিকমতো খাদ্য খাচ্ছে কিনা?
  • হাঁসের বয়স কতদিন? হাঁসের ডিম পাড়ার বয়স হয়েছে কিনা? নাকি বেশি বয়স হয়ে গিয়েছে।
  • হাঁস পানিতে, পুকুরে বা অন্যকোথাও ডিম পাড়ছে কিনা। বা অন্য কোনভাবে নষ্ট হচ্ছে কিনা
  • হাসের অতিমাত্রায় চর্বি বা ফ্যাট হয়েছে কিনা।
  • হাঁস পশম ছাড়ছে কিনা।

হাঁস ডিম পাড়া বন্ধ করে দেয় কেন

বিভিন্ন স্ট্রেস এর কারনে হাস ডিম দেয়া বন্ধ করে দিতে পারে। স্ট্রেস অনেক কিছু থেকেই হতে পারে, যেমন উচ্চ শব্দ, হাস কে তাড়ানো হলে, বাসস্থান বা তাদের পরিবেশের পরিবর্তন ঘটালে ইত্যাদি। এমনকি খাদ্য পরিবর্তন, ব্যক্তি বা শিকারী প্রাণী দ্বারাও স্ট্রেস আসতে পারে।

যেভাবে হাঁসের ডিম উৎপাদন বৃদ্ধি করবেন

  • সঠিক নিয়মে খাদ্য প্রদান করবেন। হাঁসের খাদ্য তালিকা নিয়ে আমাদের লেখাটি পড়তে পারেন।
 হাঁসের খাদ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে জানুন বিস্তারিত 

  • হাঁসের খাদ্যে প্রোটিন মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারেন। এক্ষেত্রে শামুক খাওয়ানো যেতে পারে। শামুকে প্রোটিন উপাদান বেশি থাকে। ডিম উৎপাদন বৃদ্ধিতে প্রোটিন গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখে।
  • হাঁসের বাসস্থান নির্জন রাখার চেষ্টা করতে হবে। রাতে কোনোভাবেই হাঁসকে ডিস্টার্ব করা যাবেনা। মনে রাখতে হবে, হাঁসের স্ট্রেস ডিম উৎপাদন ব্যাহত করে।
  • রাতে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত লাইটিংবা আলো দেয়া যেতে পারে।
  • খাদ্যের পরিমান বাড়াতে পারেন। অবশ্যই খাদ্য মান ভালো হতে হবে।
  • নিয়মিত ভ্যাক্সিন বা টিকা দিতে হবে। ডিম উৎপাদনের জন্য হাঁসের রোগ বালাই দমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। হাঁসকে অবশ্যই সুস্থ রাখতে হবে। হাঁস পালন করার ক্ষেত্রে হাঁসের বেশকিছু রোগ বালাই দেখা যায়। হাঁসের দুটি মারাত্নক রোগ ডাক-প্লেগ ও ডাক-কলেরা। এই দুটি রোগের ব্যাপারে অবশ্যই টিকা দিতে হবে। তবে যদি কোন হাঁস অসুস্থ্য হলে সেই হাঁসকে দ্রুত অন্যান্য হাঁস থেকে সরিয়ে নিতে হবে।
  • হাঁসকে প্রচুর পরিমানে পরিস্কার সাদা পানি দিতে হবে। ময়লা পানি থেকে দূরে রাখতে হবে।
  • বছরে একবার মল্টিং বা পশম ঝড়িয়ে দিলে হাঁসের ডিম উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।
  • হাঁসের খামারে অপরিচিত মানুষ বা অন্য কোন প্রাণী ঢুকতে দেয়া যাবেনা। হাঁস প্রচুর ভয় পায়। হাসের খামার নির্জন নিরিবিলি রাখলে হাসের ডিম উৎপাদন বাড়ে।

হাঁসের ডিম বৃদ্ধির ঔষধ

সঠিকভাবে যত্ন-পরিচর্যা করা ও নিয়মিত কিছু ভিটামিন ও মিনারেল হাঁসের ডিম উৎপাদন বৃদ্ধির সহায়ক হিসেবে কাজ করে। যেমন, এডি৩ই, ই-সেল, জিংক, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি। উল্লেখিত ঔষধগুলি কিছুদিন অন্তর নিয়মিতভাবে হাঁসকে দেয়া যেতে পারে।

উল্লেখিত বিষয়গুলি মেনে চললে ইনশাআল্লাহ অবশ্যই হাঁসের ডিম উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।

1 thought on “হাঁসের ডিম উৎপাদন বৃদ্ধির উপায়”

Leave a Comment