আমাদের দেশে আমিষের ঘাটতি পুরনে ব্রয়লার মুরগি গুরত্বপূর্ন ভুমিকা রাখে। স্বল্প সময়ে লাভজনক খামার পরিচালনার জন্য ব্রয়লার মুরগি পালন প্রচলিত ও খুবই জনপ্রিয়। এই জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের দেশে ব্রয়লার মুরগির খাদ্য ও বাচ্চা উৎপাদনসহ অনেক বড় একটা শিল্প গঠিত হয়েছে। ব্রয়লার মুরগির খাদ্য তালিকা প্রনয়নে খাদ্য উপাদান সমূহের মান ও দাম বিবেচনায় রাখতে হয়।
ব্রয়লার মুরগি খুব দ্রুত বাড়ে। এর অন্যতম কারন হচ্ছে এর অনন্য জেনেটিক বৈশিষ্ট। এর খাদ্য গ্রহন ও রুপান্তর দক্ষতা অন্য যেকোন জাতের মুরগির তুলনায় বেশী। যার ফলে ব্রয়লার খুব দ্রুত বাড়ে। নিরাপদ ও সুস্বাদু মাংস উৎপাদনের জন্য বিশ্বব্যাপী ব্রয়লার মুরগি পালন করা হয়।
লাভজনকভাবে ব্রয়লার মুরগী পালনের অন্যতম উপায় এর খাদ্য খরচ কমিয়ে আনা। এক্ষেত্রে ব্রয়লারের খাদ্য উৎপাদন করা একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয়। সঠিক ফিড ফরমুলেশন লাভজনক খামারের অন্যতম প্রধান শর্ত।
তবে চাইলে ব্রয়লার মুরগির খাদ্য উৎপাদন খামারী নিজেই করতে পারে। নিচে ব্রয়লার মুরগির খাদ্য তৈরির একটি সাধারন তালিকা দেয়া হল। মনে রাখা প্রয়োজন, ব্রয়লারের জাত বিবেচনায় খাদ্য পুষ্টিমান চাহিদা ভিন্ন হতে পারে।
খাদ্য উপাদান | স্টার্টার | গ্রোয়ার | ফিনিশার |
ভূট্টা | ৪৮ কেজি | ৫০ কেজি | ৫৩ কেজি |
সয়াবিন মিল | ৩০ কেজি | ২৬ কেজি | ২৪ কেজি |
রাইচ পালিশ | ১০ কেজি | ১২ কেজি | ১০ কেজি |
প্রোটিন ৬০% | ৮ কেজি | ৭ কেজি | ৮ কেজি |
লাইমস্টোন / ঝিনুক চূর্ণ | ২ কেজি | ২ কেজি | ২ কেজি |
লবণ | ৩০০ গ্রাম | ২৮০ গ্রাম | ২৮০ গ্রাম |
ডিসিপি | ৩০০ গ্রাম | ৩০০ গ্রাম | ৩০০ গ্রাম |
*সালমোনেলা কিলার | ২৫০ গ্রাম | ২৫০ গ্রাম | ২৫০ গ্রাম |
*প্রিমিক্স | ৩০০ গ্রাম | ৩০০ গ্রাম | ৩০০ গ্রাম |
ডিএল- মিথিওনিন | ১৫০ গ্রাম | ১৩৫ গ্রাম | ১৩০ গ্রাম |
এল-লাইসিন | ৮০ গ্রাম | ৫০ গ্রাম | ৫০ গ্রাম |
কোলিন ক্লোরাইড | ৭০ গ্রাম | ৭০ গ্রাম | ৬০ গ্রাম |
*টক্সিন বাইন্ডার | ১২৫ গ্রাম | ১৩৫ গ্রাম | ১৫০ গ্রাম |
*সয়াবিন তেল | ৫০০ গ্রাম | ২৫০ গ্রাম | – |
মোটঃ | ১০০ কেজি | ১০০ কেজি | ১০০ কেজি |
বিশেষ নোটঃ ব্রয়লারের টার্গেট বডি ওয়েট বা কাংক্ষিত ওজন নিয়ে আসতে এই খাদ্য তালিকা হতে পরিবর্তন, পরিমার্জন করা যেতে পারে। আবহাওয়ার পরিবর্তনে তালিকা পরিবর্তন যোগ্য।
ফিড এডিটিভস সমূহঃ
উপাদান | স্টার্টার | গ্রোয়ার | ফিনিশার |
এনজাইম | ৬০ | ৫০ গ্রাম | ৭০ গ্রাম |
প্রোবায়োটিক | ৬০ গ্রাম | ৫০ গ্রাম | ৪৫ গ্রাম |
ককসিডিওস্ট্যাট | ৩০ গ্রাম | ৩৫ গ্রাম | – |
গ্রোথ প্রোমটর | – | ১০০ | ১৫০ |
উল্লেখ্য যে, খাদ্য তালিকায় উল্লেখিত ফিড এডিটিভস সমূহে প্রয়োজন অনুযায়ী স্ব-স্ব কোম্পানীর নির্দেশনা মোতাবেক ব্যবহার করতে হবে। আবহাওয়ার পরিবর্তনে তালিকা পরিবর্তন যোগ্য।
বয়স অনুসারে ব্রয়লার মুরগির খাদ্য তালিকার মান
ব্রয়লার মুরগির খাবার তিন ধরনের হয়ে থাকে। সাধারণত এক থেকে দশ দিন পর্যন্ত স্টার্টার, এগারো থেকে চব্বিশ দিন পর্যন্ত গ্রোয়ার এবং পঁচিশ থেকে বিক্রির আগ পর্যন্ত ফিনিশার খাদ্য দেয়া হয়। যথাযথ পুষ্টিমান জেনে আপনি সহজেই ব্রয়লার মুরগির খাদ্য তৈরী করতে পারেন।
খাবারের নাম | বয়স (দিন) | এনার্জি মান (KCal) | প্রোটিন মান(%) |
স্টার্টার | ১-১০ | ৩১০০-৩২৫০ | ২২-২৩ |
গ্রোয়ার | ১১-২৪ | ৩০০০-৩১০০ | ২০-২১ |
ফিনিশার | ২৫- ৩৫ | ২৯৫০-৩২০০ | ২১-২২ |
নোটঃ শীতকালে এনার্জি মান বাড়ানো এবং গরমে এনার্জি মান কমানো যেতে পারে।
স্যার , আমি নিজে খাদ্য তৈরি করে আমার ফার্মের মুরগীকে খাওয়াতে চাই ।
তাই, আপনার কাছে একটা অনুরোধ করছি যে,
কিভাবে সঠিক মানসম্মত বয়লার খাদ্য যায় ।
এই সম্পর্কে মতামত দেন।
আপনার উদ্যোগের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। এক্ষেত্রে আপনার খাদ্য খরচ অনেক কমে আসবে। আমরা শীগ্রই ব্রয়লার খাদ্য ফরমুলেশন সম্পর্কে একটি লেখা পোস্ট করবো। সাথেই থাকুন।
আপনারা কি ফিড ফরমুলা দিয়েছেন
আমাদের পোস্টটি আপডেট করা হয়েছে। এই পোস্টেই ব্রয়লার মুরগির ফিড ফরমুলেশন শতাংশে দেয়া আছে। বুঝতে অসুবিধা হলে কমেন্ট জানাতে পারে।
ভাই ফিড এডিটিভস কী কিনতে পাওয়া যায়? পাওয়া গেলে কী নামে পাওয়া যায়?
জ্বি, ফিড এডিটিভস সমূহ কিনতে পাওয়া যায়। একেক কোম্পানি একেক নামে বিক্রয় করে থাকে।
বয়লার মুরগির খাদ্য তৈরির তালিকা
বাজারে ২৫ কেজির ব্যাগে ব্রয়লার হাউজ ফিড পাওয়া যায়। এই ফিড মুরগিকে কখন থেকে খাওয়াতে হয়? এতে লাভ ক্ষতি যদি একটু বলতেন। উপকৃত হইতাম
বাজারে ২৫ কেজির সাধারনত মার্কেট ফিড থাকে। এই খাদ্যের দাম ও মান দুটিই কম। সাধারনত যারা দোকানে বা আড়তে বসে মুরগি বিক্রয় করে। তারা এই ফিড ব্যাবহার করে। খামারীদের জন্য এই ফিড উপযোগী নয়।
ধন্যবাদ।
হ্যলো ভাই, প্রোটিন ৬০% কি?
জানালে উপকৃত হতাম।।।।
ধন্যবাদ,,,,,
বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির প্রোটিন মিল কিনতে পাওয়া যায়। এখানে মিলের প্রোটিন এর নুন্যতম মান ৬০% ধরে হিসেব করা হয়েছে।
আমি একটা ব্যাপারে সন্দিহান ব্যাপারটা হল এই যে, কেউ যদি নিজের ফার্মের জন্য Feed Formulation Apps দেখে খাবার তৈরী করে খাওয়ায় তাহলে কি মুরগির সঠিক গ্রোথ আসবে কি। নাকি খাবারের সিজনাল কোন নিতীমালা আছে। ০১৭২৮৯০৪১৩৮
বাজারের ফিডে ৩০-৩৫ দিনে ১৮০০৷ গ্রাম ওজন চলে আসে,এই ফর্মুলায় কী তা আসবে? কারণ, অনেকেই বলে কোম্পানি ফিডে এমন কিছু উপাদান, যেমন ট্যানারি বর্জ্য দেয়া থাকে,যার কারণে ৩০-৩৫ দিনে ওজন চলে আসে,এই ফর্মুলায় কতদিন লাগবে।