বিশ্বব্যাপী ব্রয়লার মুরগি প্রোটিন যোগানের অন্যতম প্রধান উপাদেয়। ব্রয়লার মুরগি পালন সহজ ও লাভজনক হওয়ায় অদিকাংশ খামারীরা ব্রয়লার পালনের মাধ্যমেই তাদের প্রোল্ট্রি ব্যাবসা শুরু করে থাকেন। ব্রয়লার মুরগি একটি হাইব্রিড মুরগি হলেও এর বিভিন্ন জাত রয়েছে। কোম্পানি ভেদে ব্রয়লার মুরগির জাত ভিন্ন হয়ে থাকে। নিচে ব্রয়লার মুরগি সম্পর্কে বিষদ আলোচনা করা হলো।
ব্রয়লার মুরগি কি
ব্রয়লার মুরগি হচ্ছে জেনেটিকালি ডেভেলপকৃত একটি উন্নত জাতের মুরগি। যেটি মূলত মাংস উৎপাদনের জন্য পালন করা হয়। ব্রয়লার সাধারনত ৪ থেকে ৭ সপ্তাহের ভিতরেই বিক্রয় উপযোগি হয়।
বিভিন্ন উন্নত জাতের মুরগির জেনেটিকালি ইম্প্রুভ করে ব্রয়লার মুরগির প্যারেন্ট লাইন তৈরি করা হয়। ফলে এরা স্বাভাবিকভাবেই উন্নত বৈশিষ্ট নিয়ে জন্মায়। দ্রূত শারিরিক বৃদ্ধির জন্য কোন অস্বাভাবিক প্রক্রিয়া গ্রহন করা হয়না। এজন্যই ব্রয়লার FDA অনুমোদিত সম্পূর্ন নিরাপদ আমিষের যোগান বলে বিবেচিত।
যেভাবে ব্রয়লার মুরগির জাত ডেভেলপ করা হয়
প্রথমত বিশুদ্ধ ভারী জাতের মুরগি যেমনঃ কর্ণিশ, সাসেক্স, প্লাইমাউথ রক ইত্যাদি নির্বাচন করা হয়। এদের মধ্যে সংকরায়ন ঘটিয়ে উন্নত জাতের কয়েকটি লাইন তৈরি করা হয়।
উক্ত লাইন থেকে সিলেকশন পদ্ধতিতে ভালো জাতের মোরগ-মুরগি নির্বাচন করা হয়। এভাবে ভারী জাতের লাইনের মোরগ ও উন্নত ডিমের লাইনের মুরগির কয়েকটি ধাপে পুনরায় ক্রস করানো হয়। এদের থেকে ব্রয়লার মুরগির গ্রান্ড-প্যারেন্টস তৈরি করা হয়।
এই গ্রান্ডস প্যারেন্ট থেকে ব্রয়লার মুরগির প্যারেন্টস ও এই প্যারেন্টস থেকেই ব্রয়লার মুরগি উৎপাদন করা হয়।
নিচে একটি ছবির মাধ্যমে প্রক্রিয়াটি দেখানো হলো।
ব্রয়লার মুরগি ডেভেলপকারী কোম্পানি
পৃথিবী বিখ্যাত কয়েকটি কোম্পানি ব্রয়লার মুরগির জাত উন্নয়ন নিয়ে কাজ করে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে এভিয়াজেন, লোহম্যান, কব-ভেন্ট্রিস, হাববার্ড, টেট্রা ইত্যাদি কোম্পানি।
এই কোম্পানি সমূহ ব্রয়লার মুরগির জেনেটিকালি ভ্যারিয়েশন ঘটিয়ে অথবা অন্য কোন কোম্পানির স্বত্ত কিনে আবার বিভিন্ন নামে ব্রান্ডিং করে। যেমন, এভিয়াজেন কোম্পানির রস, ইন্ডিয়ান-রিভার, আরবর-একর নামের ব্রান্ড রয়েছে।
ব্রয়লার মুরগির জাত নির্বাচন কিভাবে হয়
মুলত ব্রয়লার মুরগি ডেভেলপকৃত কোম্পনি সমূহই ব্রয়লারের নাম দিয়ে থাকে। এই নাম ডেভেলপকৃত মুরগির ভিন্ন বৈশিষ্টের কারনেই দেয়া হয়। যেমন রস ব্রান্ডের তিনটি জাত রয়েছে; রস-308, রস-708, রস 308 AP । ঠিক তেমনি কব-ভেন্ট্রিস রয়েছে; কব-৫০০, কব-৭০০ জাতের ব্রয়লার।
প্রতিটি জাতেরই ভিন্ন বৈশিষ্ট থাকতে পারে। কোন জাত তাপ সহ্য করতে পারেনা, কোন জাতের আবার পালক কম হয়, বা কোন জাত ২৪ দিনের পর দ্রুত বাড়ে। ফলে এদের ম্যানেজমেণ্টে ভিন্নতা রয়েছে। এজন্য ব্রয়লার মুরগির জাত সঠিকভাবে জেনে নেয়া প্রয়োজন।
ব্রয়লার মুরগির জাত
পৃথিবীখ্যাত কয়েকটি কোম্পানি ব্রয়লার মুরগির গ্রান্ড প্যারেন্টস তৈরি করে থাকে। এসব কোম্পানি হতেই আমাদের দেশে জনপ্রিয় কিছু ব্রয়লার মুরগির জাত আমদানি করা হয়। এর মধ্যে রয়েছেঃ-
এভিয়াজেন এর ব্রান্ড
- ইণ্ডিয়ান রিভার
- লোহম্যান মিট (বর্তমানে আই আর নামে)
- আরবর একর’স
- রস এর
- রস-308,
- রস-708,
কব_ভেনট্রিস এর
- কব-500
- কব-700
হাববার্ড এর
- এফিসিয়েন্সি প্লাস
- হাববার্ড এফ ১৫ (হাবার্ড ক্লাসিক)
ব্রয়লার মুরগি পালন পদ্ধতি
ব্রয়লার উন্নত জাতের মুরগি হওয়ায় এরা ধকল সহ্য করতে পারেনা। সঠিক ব্যাবস্থাপনা না করা হলে ব্রয়লার পালনে লাভ করা স্বম্ভব নয়। তবে প্রতিটি ব্রয়লার জাতের আলাদা ব্যাবস্থাপনা থাকতে পারে। যেগুলি সধারনত জাত ডেভেলপকৃত কোম্পানির সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটে দেয়া থাকে।
উধাহরন স্বরুপ এখানে ‘আরবর-একরস‘ এর ব্রয়লার ম্যানেজমেন্ট গাইড লিঙ্ক দেয়া হলো।
আমাদের এই লেখাটি আপনাকে আরো সহজ ভাবে বুঝতে সাহায্য করবে।
লাভজনক ব্রয়লার মুরগি পালনে যে বিষয় গুলি জানা দরকার
অন্য যেকোন কোম্পানির ম্যানেজমেন্ট গাইডের জন্য আমাদের মেইল করুন। Email: admin@poultrygaints.com
আরো পড়ুন..
ব্রয়লার মুরগির ভ্যাকসিন সিডিউল
ব্রয়লার মুরগি সম্পর্কে আরো জানতে চাইলে বা আপনার মতামত জানাতে কমেন্ট করতে পারেন।
আপনাদের সাইটটা দারুণ ভুমিকা রাখতে পারে নতুন নতুন কর্ম ক্ষেত্র তৈরি করার ব্যাপারে।
আমি কব ৫০০ বা কব ৭০০ খামার পরিচালনা বিসয়ে জানতে চাই
আসসালামু আলাইকুম
আমার ১ হাজার করে ২ টি ফার্ম আছে,
ডিলার কে যতই বলি Aগ্রেড বাচ্চা দিতে তারা দেয় না, Bগ্রেড বা C গ্রেড বাচ্চা দিয়ে বলে এটাই A গ্রেড বাচ্চা,
বাচ্চার ওজনঃ নিচে ৩৫ গ্রাম থেকে ৫৫ গ্রাম কোনটা ৬০ গ্রামও হয়,
মাস সেসে দেখা যায় মুরগির ওজন কোনটা ১২০০ আবার কোনটা ২২০০ হয়ে যায়,
দের বছর ধরে লাভ দেখিনা, মাস সেসে নিজের জানটাই সম্বল নিয়ে ঘরে ফিরতে হয়,
৩৬৭০ টাকা প্রতি বস্তা আদারের দাম
A গ্রেড বাচ্চা চেনার উপায় কি…….?
বা কি কি করলে লাভোবান হবো
আপনাদের গুরুত্তপুর্ন মতামতটা যদি বলতে
নগদ টাকায় ব্যবসার বিকল্প দেখছিনা। নগদে খাদ্য কিনলে বস্তাপ্রতি ৩৪০০-৩৪০০ টাকার বেশি হওয়ার কথা না। অথচ আপনি বস্তাপ্রতিএখানেই লস করছেন প্রায় ৩০০ টাকার মত। অর্থাৎ আপনার ২০০০ বার্ডে ৯০ বস্তায় বেশি খরচ হচ্ছে প্রায় ২৭,০০০ টাকার মত।
দ্বিতিয়ত, ডিলাররা সাধাররনত বাচ্চা গ্রেডিং করেনা। প্রতিটা কোম্পানির বাচ্চার কার্টুনের উপর বাচ্চার মান ও জাত লেখা থাকে। বাচ্চা নেয়ার সময় চেক করে নিতে হবে।
আপনি যদি ভালো কোয়ালিটির বাচ্চা ম্যানেজ না করতে পারেন, তবে খামারে বাচ্চা না উঠানোর পরামর্শ দেয়া যেতে পারে। ভালো মানের বাচ্চা ছাড়া লাভজনক খামার করা দূরহ।
যে বাচ্চাগুলি ছোট হয়ে যায়, অবশ্যই আলাদা করে দিয়ে খাদ্য দিতে হবে। ম্যানেজম্যান্টের দিকে ভালো নজর দিন।
একটা বিষয় মাথায় রাখবেন, রেডি মালের বাজার আপনার হাতে নেই ঠিক। তবে ম্যানেজমেন্ট আপনার হাতে। ভালো ম্যানেজমেন্ট করতে পারলে, কাংখিত ওজন আসলে্, লাভ না হলেও লস হওয়ার সম্ভাবনা কম।