কেন আপনি কোয়েল পালন করবেন ।। কোয়েল পালনের সুবিধাঃ

অনেক সুবিধা থাকার কারনে, কোয়েল পালন দিন দিন খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কোয়েলের খামার বাড়তি আয়ের একটি সহজ মাধ্যম হতে পারে। কম খরছে উচ্চ মুনাফার জন্য কোয়েলর খামার একটি আদর্শ ব্যবসা। অন্য যে কোন পাখির তুলনায় কোয়েল পাখি পালনে, জায়গা এবং খরচ অনেকাংশেই কম প্রয়োজন। এমনকি বাসার উঠোন, বাগান, কিংবা ছাদের উপরেও কোয়েলের খামার করা সম্ভব। প্রায় সকল ধরনের আবহাওয়ায় কোয়েল পালন করা যায়। বাজারে কোয়েলজাত পন্যের উচ্চচাহিদা রয়েছে, সুতরাং পণ্য মার্কেটিং নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। যাইহোক, এখানে আমরা কোয়েল পাখি পালনের শীর্ষকিছু সুবিধার কথা বর্ণনা করব।

কোয়েলের-ডিম
কোয়েলের ডিম

সহজ ব্যবস্থাপনাঃ

কোয়েল ছোট আকারের পাখি, তাই কোয়েল অল্প জায়গায় পালন করা যেতে পারে। কোয়েল পালন করা খুবই সহজ। সামান্য যত্ন ও ব্যবস্থাপনায় কোয়েল পালন করা যায়। কোয়েল পালনের জন্য তেমন অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয় না। তাই অল্প কিছু ধারনা নিয়ে, আপনিও কোয়েল পালন শুরু করতে পারেন।

আত্ননির্ভরশীল ব্যবসাঃ

কোয়েলের খামার একটি আত্ননির্ভরশীল ব্যবসা। এটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ হচ্ছে ডিম এবং বাচ্চা। কোয়েল সাধারণত ৬ সপ্তাহের মধ্যেই ডিম দেয়া শুরু করে। সুতরাং আপনি ডিম বিক্রি করেই আপনার প্রাথমিক বিনিয়োগ দ্রুত ফেরত পেতে পারেন। অন্যান্য খামারের তুলনায় কোয়েল পাখির খামার থেকে দ্রুত বিনিয়োগ ফেরত পাওয়া যায়।

এছাড়াও খামার থেকে আপনি হ্যাচিং এর জন্য কিছু উর্বর ডিম সংগ্রহ করতে পারেন। ডিম থেকে বাচ্চা ফুটিয়ে আপনি আপনার খামারের কোয়েল পাখির সংখ্যা দ্বিগুন বা তিনগুন করতে পারেন।

কম খরচে রক্ষণাবেক্ষণঃ

কোয়েল পাখির জন্য উচ্চ রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন হয় না। আকারে ছোট এজন্য এদের খুব বেশি স্থান প্রয়োজন হয় না। নিয়মিত ও সঠিক পরিচর্যা কোয়েল পাখি ব্যবসার সাফল্যের চাবি।

স্বল্প খাদ্য খরচঃ

অন্যান্য পোল্ট্রির তুলনায় কোয়েলের অনেক কম খাদ্যের প্রয়োজন। কোয়েলের খাদ্য তৈরীতে বেশী খরচ প্রয়োজন হয় না। সাধারণ ভুট্রা,গম ইত্যাদির মিশ্রাণে উন্নতমানের খাদ্য তৈরী করা যায়। বাণিজ্যিক পোল্ট্রির ফিড দিয়ে কোয়েল পাখি পালন করা যায়। এ ছাড়াও কোয়েল অন্যান্য শস্য, লতাপাতা এবং ছোট ছোট পোকামাকড় খেতে ভালোবাসে।

কোয়েল
কোয়েল পাখি

শক্ত এবং রোগ প্রতিরোধী পাখিঃ

কোয়েল খুব কঠোর পাখি। কোয়েল পাখি সহজে অসুস্থ হয় না এবং এদের খুব বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হয় না। এদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো। তারপরেও আপনি সার্বক্ষণিক চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ নিশ্চিত করবেন।

উচ্চ বাজার চাহিদাঃ

কোয়েলের মাংস ও ডিমের চাহিদা বাজারে ব্যাপক। তুলনামূলক দাম কম হওয়ায় অনেকেই ক্রয় করে থাকেন। কোয়েলের ডিম ও মাংস খুব কম চর্বি এবং উচ্চ প্রোটিন সম্পন্ন। এসকল কারনে কোয়েলের জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটা ধারনা করা হয় যে, কোয়েল জাত পন্য লিভার, উচ্চরক্তচাপ, ত্বক ইত্যাদি রোগের চিকিৎসায় সাহায্যে করতে পারে।

কোয়েলজাত পণ্য স্বাস্থ্যকর এবং সুস্বাদুঃ

কোয়েলের ডিম এবং মাংস দুটোই উচ্চ মানের, পুষ্টিকর এবং সুস্বাদু। কোয়েলের মাংস এবং ডিম গুণগতভাবে অন্যান্য পোল্ট্রির তুলনায় শ্রেষ্ঠ। কোয়েলের ডিমে কোলেস্টরলেন পরিমাণ কম এবং আমিষ বেশি। একটি মুরগির পরিবর্তে 8 টি কোয়েল পালন করা যায়। কোয়েলের মাংস ও ডিম গুরুত্বপূর্ণ খনিজ এবং ভিটামিন সরবারহ করে, এজন্য খুব দ্রুত তা জনপ্রিয়তা অর্জন করছে।

কোয়েল-জাত-পণ্য
কোয়েল জাত পণ্য

সৌখিনতাও বটেঃ

সৌখিন মানুষজন সাধারনত পাখি পুষতে পছন্দ করে। কোয়েল পাখি একাধারে সৌখিনতাও পূর্ণ করে, অন্যদিকে কিছু টাকা আয়ের পথও তৈরি করে। কোয়েল পালন একটি বিনোদোন মূলক কাজও বটে। আপনি আপনার কোয়েল পাখির সঙ্গে কিছু ভালো সময় কাটাতে পারেন।

এগুলো কোয়েল পালনের শীর্ষ কিছু সুবিধা। আপনি যদি কোয়েলের খামার শুরু করার পরিকল্পনা করেন, তাহলে এই লেখাটি আপনাকে সাহায্য করবে বলে আশা রাখি।

Leave a Comment