কোয়েল পাখির রোগ ও তার প্রতিকার :

কোয়েল এমন এক প্রজাতির পাখি যার কোন রোগবালাই নেই বললেই চলে। সাধারণত কোনো ভ্যাকসিন অথবা কৃমিনাশক ঔষধ দেয়ার প্রয়োজনও পড়ে না। তবে বাচ্চা ফুটার প্রথম 2 সপ্তাহ বেশ ঝুকিপূর্ণ। এ সময় বাচ্চার একটু বেশি যত্ন নিতে হয়। আর তাই জন্মের পরই বাচ্চার তাপ দেওয়া খুবই জরুরী। অন্যথায় অযত্নের ফলে অনেক সময় বাচ্চা মারা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।  সাধারণত কোয়েলের তেমন কোনো রোগ বালা হয় না বলেই অন্যান্য প্রাণির তুলনায় এর পালন ও লাভজনক হয়ে থাকে।

কোয়েলের মাংস এবং ডিম গুণগতভাবে অন্যান্য পোল্ট্রির তুলনায় শ্রেষ্ঠ। কোয়েলের ডিমে কোলেস্টরলেন পরিমাণ কম এবং আমিষ বেশি। একটি মুরগির পরিবর্তে 8 টি কোয়েল পালন করা যায়।

     কোয়েলের যদিও তেমন কোন রোগ বালাই হয়না তবুও এর রোগ বালাই সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। যাতে রোগ বালাই হলে আমরা খুব সহজেই এর প্রতিকার করতে পারি।

কোয়েলের রোগ সমূহ :

  1. কোয়েল ডিজিজ (
  2. কলিসেপ্টিসেমিয়া।
  3. ক্লোমনালী প্রদাহ।
  4. রাণীক্ষেত।
  5. অ্যাসপারজিলোসিস বা বরুডার নিউমোনিয়া।
  6. রক্ত আমাশয়/ কক্সিডিউসিস।
  7. কোয়েল পক্স।
  8. এভিয়ান কলেরা।
  9. কৃমির আক্রমণ।
  10. কার্ল টো প্যারালাইসিস।
  11. ডিম আটকে যাওয়া।
  12. মারেক্স রোগ।
  13. ঠোকরা-ঠুকরি বা ক্যানিবালিজম।
  14. লিম্ফয়েড লিউকোসিস।
  15. কোয়েল ব্রংকাইটিস।
  16. ব্লাকহেড/ হিস্টোমোনিয়াসিস।

1. কোয়েল ডিজিজ :

এটি কোয়ের পাখির সবথেকে মারাত্মক ও ভয়ানক রোগ। এর আরেক নাম আলসারেটিভ এন্ট্রাইটিস। মুরগি, টার্কি এবং অন্যান্য পাখিরা কোয়েল রোগের সংক্রমণ করতে পারে। “আলসারেটিভ এন্ট্রাইটিস” অন্যান্য পাখি থেকে বিচ্ছুরণের মাধ্যমে পাখির সিস্টেমে প্রবেশকারী ব্যাকটিরিয়ার করণে হয়। এটি অন্যান্য অসুস্থ পাখির সংস্পর্শে আসা মাছিগুলির দ্বারাও সংক্রমিত হতে পারে। এই রোগে আক্রান্ত কোয়েলের 100% ও মারা যেতে পারে।

কোয়েল ডিজিজের লক্ষণসমূহ :

  • এটি এতই মারাত্মক রোগ যে, আক্রান্ত কোয়েল অনেক সময় কোন লক্ষণ ছাড়াই মারা যেতে পারে।
  • এই রোগের ফলে পাখির শরীরে ক্লান্তি ভাব দেখা দিতে পারে।
  • রক্তসহ পাতলা পায়খানা হয়।
  • ঝিমুনি ভাব দেখা দেয়।
  • অনেক ক্ষেত্রে পাখি দীর্ঘদিন রোগে ভুগে দুর্বল হয়ে মারা যায়।
  • অন্ত্র ও সিকান্ত্রে বোতাম আকৃতির মারাত্মক ক্ষত বা আলসার দেখা যায়।
  • খিচুনি হয়।
  • ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া।

কোয়েল ডিজিজের চিকিৎসা :

যদি আপনার পাখি কোয়েল রোগে আক্রান্ত হয় তাহলে যতদ্রুত সম্ভব নিকটস্ত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া। বেশিরভাগ কোয়েল এই রোগ থেকে বাঁচতে পারে না। তবে দ্রুত ধরা পড়লে প্রথিমিক পর্যায়ে এর চিকিৎসা এবং রোধ করা যায়। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নির্দেশিত মাত্রায় ক্লোরোমাইসেটিন, ব্যাসিট্র্যাসিন, স্ট্রেপটোমাইসিন বা টেট্রাসাইক্লিন জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে।

Leave a Comment